পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নানাকথা : শিক্ষাপ্রণালী Woo & বিভাগের অধিষ্ঠাত্রী দেবী স্পন্দহীন, বর্ণহীন, নীরস, নীরব ক’য়ে পৰ্য্যবসিত হইয়াছেন। র্তাহার চিন্তা নাই, বেদন নাই, অনুভূতি নাই, তিনি কেবল শিক্ষা-ঘন্ত্রের কোন অনির্দেশু স্থানে অবস্থিত থাকিয় শুষ্ক কঠোর ব্যবস্থ নির্দেশে ও নিয়ম নির্দেশে ও দণ্ড চালনায় শিক্ষার্থীর ভ্রমণপথ নিয়ন্ত্রিত করেন। বাগ দেবী ত দূরে আছেন, যে শিক্ষক ও অধ্যাপক সম্প্রদায় মধ্যবর্তী থাকিয়৷ উপাসিতার সহিত উপাসকের সম্বন্ধ স্থাপনে নিয়োজিত র্তাহারাও রাগানুরাগবৃন্ত যন্ত্রাঙ্গ মাত্রে পরিণত হইয়াছেন। আচাৰ্য্য ও শিষ্যের মধ্যে প্রেমের সম্বন্ধ ও অনুরাগের সম্বন্ধ না থাকিলে অধ্যয়ন ও অধ্যাপনা কাৰ্য্য কেবল পণ্য বিনিময়ের ন্যায় হইয়া দাড়ায় ; এবং সেই পণ্য বিনিময়ের ফলে আর যাঁহাই, হউক না কেন, তাহাতে মহন্তত্বের পুষ্টলাভের কোন আশা থাকে না। একালের বেতনভোগী রাজপুরুষ যেমন আপন নিৰ্দ্ধারিত কর্তৃব্য কৰ্ম্ম সম্পাদনের পর আপনাকে ঋণমুক্ত বলিয়া বিবেচনা করেন, তাহার পরিশ্রমের আশাতুরূপ ফল লাভ ঘটিল কি না, তাহার অপেক্ষায় বসিয়া থাকিতে র্তাহার অবসরও নাই, প্রবৃত্তিও নাই, একালের অধ্যাপকও সেইরূপ র্তাহার বৃত্তির বিনিময়ে নিৰ্দ্ধারিত কৰ্ম্ম সম্পাদন করিয়া আপনার সকল কৰ্ত্তব্য সম্পাদিত হইল ধ্রুব জানেন, তাহার শিন্থের সহিত জুরি কোন সম্পর্ক রাখিবার প্রয়োজন ঘটে না। কালের কুটিল চক্রে শিক্ষা আজকাল বিজ্ঞানশিক্ষা, সাহিত্যশিক্ষা, ধৰ্ম্মশিক্ষা, নীতিশিক্ষা, ইতিহাসশিক্ষা, হাতে কলমে শিক্ষা বা টেকৃনিক্যাল শিক্ষা ইত্যাদি নানা উপাধিতে অলঙ্কত হইয়া সহস্ৰ শ্রেণীতে বিভক্ত হইয়াছে ; এবং কোন শিক্ষা ভাল আর কোন শিক্ষা মন্দ এই তর্কের কোলাহলে দিগন্ত প্রতিধ্বনিত হইতেছে। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, আমরা এই কোলাহলের অর্থ সম্যকৃ উপলব্ধি করিতে একবারেই অক্ষম। শিক্ষা বলিলে আমরা কেবল একটা মাত্র শিক্ষাই বুঝিয়া থাকি ; এবং সেই শিক্ষার অর্থ মহন্তত্বের বৃদ্ধি, স্ফুক্তি ও পরিপুষ্ট। যাহাতে অপুষ্ট মনুষ্যত্ব পুষ্টলাভ করে, প্রচ্ছন্ন মনুষ্যত্ব বিকাশ পায়, হীন মনুষ্যত্ব স্মৃত্তিলাভ করিয়া জাগ্রত ও চেতন হইয়৷ উঠে, তাহাকেই আমরা শিক্ষা নামে অভিহিত করিয়া থাকি, এবং সেই শিক্ষায় আবার একটা ভিন্ন যে পাচটা পথ আছে, তাহাও আমাদের কল্পনায় আসে না । সত্য বটে, মচুন্য বয়স্ক হইলে তাহাকে একটা ব্যবসায়-বিশেষ অবলম্বন করিয়া জীবিকা নিৰ্বাহ করিতে হয়,–এবং সেই ব্যবসায়-অভিজ্ঞত লাভের জন্য কিছু দিন একটা সঙ্কীর্ণ রাস্তায় শিকল পায়ে দিয়া বিচরণ করা আবশ্বক হইয়া উঠে । কিন্তু সে বয়সের কথা, বাল্যের কথা নহে। যাহার মনুষ্যত্ব ক্ষত্তি ও বৃদ্ধি লাভ করিয়াছে, যাহার গায়ে বল জন্সিয়াছে, যে অন্যের হাত না ধরিয়া অথবা যুষ্টির সাহায্য না লইয়া নিজের পায়ের উপর নিজে দাড়াইতে সমর্থ হইয়াছে, যাহার চোখের উপর একটা রঙিন পরকলার আচ্ছাদন নাই, এবং সেই চোখ উন্মীলন করিয়া যে দিগন্ত পৰ্য্যন্ত দৃষ্টিপাতে সমর্থ হইয়াছে, তাহাকে এই ব্যবসা শিক্ষার জন্য প্রয়াসের দরকার হইবে না । সে আপন ব্যবসায় আপনি বাছিয়া লইবে, আপন রাস্ত আপনি দেখিয়া লইবে, এবং আবগুক হইলে সেই নিৰ্ব্বাচিত পথে বাহির হইয়া ঠারকু হস্তে তাহার প্রতি