পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ধ্বনি-বিচার মহাকবি কালিদাস বাক্যের সহিত অর্থের সম্পর্ক হরগৌরীর সম্পর্কের মত নিত্য জানিয়া বাগৰ্থপ্রতিপত্তির জন্য হরগৌরীকে বন্দনাপূর্বক মহাকাব্য আরম্ভ করিয়াছিলেন; কিন্তু ঐ সম্পর্ক কিরূপে আসিল, তাহী পণ্ডিতেরা অদ্যাপি মাথা খুড়িয়াও নিরূপণ করিতে পারেন নাই। ভাষার অন্তর্গত কতকগুলি শবদ নৈসৰ্গিক ধ্বনির অকুকরণে উৎপন্ন, তাহাতে কোন সন্দেহ নাই। কিন্তু ভাষার অন্তর্গত যাবতীয় শব্দের এইরূপে উৎপত্তি বুঝা যায় না। কী কী করে বলিয়া কাকের নাম কা ক, আর কু হু কুহু করে বলিয়। কোকিলের নাম কো কি ল, ইহা বুঝা যায় ; এমন কি, কেউ কেউ যে করে সে কুকু র, ইহাও অনুমান চলে। এইরূপে কতক দূর যাওয়া চলে, কিন্তু বহু দূর যাওয়া চলে না। স্বাভাবিক ধ্বনির অষ্ট্রকরণে ভাষার উৎপত্তি হইয়াছে, এই মতটাকে ইংরেজীতে পণ্ডিতের ভাষায় অনোম্যাটপিক থিয়োরি বলে। বিদ্রুপ করিয়া ইহাকে bow-wow theory বা ভেউ-ভেউ-বাদ বলা হয়। বলা বাহুল্য যে, এই ভেউ-ভেউ-বাদের দৌড খুব অধিক নহে । আমাদের বাঙ্গালা ভাষায় কিন্তু ইহার দৌড় বোধ করি, অন্য ভাষার চেয়ে অধিক। নৈসৰ্গিক ধ্বনির অনুকরণজাত বাঙ্গালা শবের সম্পূর্ণ তালিকা এ পর্য্যন্ত কেহ প্রস্তুত করেন নাই। প্রচলিত বাঙ্গালা কোষগ্রন্থে এই শ্রেণীর শব্দের স্থান নাই, দয়া করিয়া জুই চারিটাকে স্থান দেওয়া হয় মাত্র; কিন্তু চলিত মৌখিক ভাষায় ইহাদের সংখ্যাব সীমা পাওয়া যায় না । আমাদের শাব্দিক পণ্ডিতদিগের নিকট এই শ্রেণীর শব্দের আদর নাই বটে, কিন্তু আমাদের কবিগণ ইহাদিগকে অবজ্ঞা করিতে পারেন নাই। প্রাচীন বাঙ্গালী কবিগণের মধ্যে ভাষায় অধিকারে র্যাহার তুলন। মিলে না, বাগ দেবতা যাহার লেখনীমুখে আবিভূত হইয়া মধুবৃষ্টি করিয়া গিয়াছেন, সেই ভারতচন্দ্র এই শ্রেণীর শব্দগুলির কেমন প্রচুর প্রয়োগ করিয়াছেন, তাহা কাহারও অবিদিত নাই। শাব্দিক পণ্ডিতের ধ্বন্তাত্মক শব্দগুলির আলোচনায় অবজ্ঞা করিতে পারেন, কিন্তু ভারতচন্দ্রকে অবজ্ঞা করিতে সাহসী হইবেন না। অন্নদামঙ্গলের ‘দ ল ম্ম ল দল ম্ম ল গলে মুণ্ডমালা’ এব" ‘ফ না ফন ফ না ফন ফণীফন্ন গাজে প্রভৃতি পদাবলী বাঙ্গালা সাহিত্য হইতে লুপ্ত হইবে না । এই অনুকরণজাত বাঙ্গাল শব্দগুলির বিশিষ্টতা এই যে, উহাদের অধিকাংশ শব্দই দেশজ শব্দ। সংস্কৃত ভাষায় উহাদের মূল খুঁজিয়া পাওয়া যায় না। দেশজ বলিয়। উহাদেৱ গায়ে অনার্য্য গন্ধ আছে; এ দেশের শাব্দিক পণ্ডিতেরা, র্যাহারা বিশুদ্ধ আর্য্যভাষার শব্বতত্ত্ব আলোচনা করিয়া পণ্ডিত হইয়াছেন, তাহারা এই গন্ধ সহিতে পারেন না। তাহারা সহিতে না পারুন, কিন্তু বুদ্ধ আৰ্য্য সংস্কৃত-ভাষা ঠাকুরাণী ৰে কালক্রমে এই শ্রেণীর বহু শব্দকে হজম করয়া লইয়াছেন, তাহা ৰে-কোন সংস্কৃত কোষগ্রন্থ খুলিলেই দেখা যাইবে এবং বৈদিক আী। সংস্কৃতের সাহত আধুনিক লোকক حاس-tfة