পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নানাকথা : সামাজিক ব্যাধি ও তাহার প্রতিকার &3 আমাদের সমাজমধ্যে উপদেষ্টার সংখ্যা ও গুরুর সংখ্যা যেরূপ সমগুণ শ্রেণীর নিয়মানুসারে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাইয়া আসিতেছে, তাহাতে সমাজের ভবিষ্যৎ সামাঞ্জিকগণের পক্ষে চিন্তার বিষয় হইয়াছে বলিয়াই বোধ হয়। বর্তমান কালে আমাদের সমাজ বিবিধ ব্যাধিতে রুগ্ন ও জীর্ণ হইয়া পড়িয়াছে, সন্দেহ নাই ; কিন্তু চিকিৎসকের সংখ্যাধিক্য দেখিয়া এক একবার আশঙ্কা হয়, বুঝি বা বৈদ্য-সঙ্কটেই রোগীর প্রাণ যায়। প্রত্যেক বৈদ্যরাজই এক একটা অব্যর্থ ঔষধের পেটেণ্ট লইয়া তারস্বরে চীৎকার করিতেছেন ও প্রশংসাপত্রমণ্ডিত ঔষধের বোতল মাথায় রাজপথে হুঙ্কার করিয়া গৃহস্থের শাস্তিভঙ্গ করিতেছেন। কিন্তু হায় ! অমোঘ ঔষধের সংখ্যাও যে পরিমাণে অধিক, রোগ প্র তকাবের সম্ভাবনাও সেই পরিমাণে অল্প । বৰ্ত্তমান সময়ে যদি কোন অজ্ঞাত-কুলশীল ব্যক্তি আপনাকে অকস্মাৎ লোকসমাজে জাহির করেন ও সামাজিক ব্যাধির উৎকটত সম্বন্ধে লেকৃচার দিতে প্রবৃত্ত হন, তাহা হইলে তাহার প্রতি ভদ্র জনের সংশয়সমাকুল দৃষ্টিপাত কতকটা স্বাভাবিক হয়। সাধারণে আশঙ্কা করিতে পারেন, এই অপরিচিত মচুৰ্য্যটির অসাময়িক বক্তৃতাবৰ্ষণের পর-মুমুৰ্ত্তেই তাহার ঝুলি হইতে এমন একটি কেীট বাহির হইবে, যে কোঁটার অন্তর্গত বটিকাগুলি সাইবিরিয়ার তুষারক্ষেত্র হইতে আনীত ম্যামথের অস্থিচূর্ণ হইতে প্রস্তুত হওয়ায় একেবারে অব্যথ, এবং তাহার একটি কোটা মাত্র যিনি খরিদ করিবেন, তাহার রোগ মোচন ত হইবেই, পরস্তু পথ্যলাভের পরদিনই কবিরাজ মহাশয় ঘটকালি করিয়া ক্যাম্স্কটুকার রাজকন্যার সহিত রোগীর বিবাহ ঘটাইয়া দিবেন। সাবিত্রী লাইব্রেরীর অধ্যক্ষ মহোদয়ের নিতান্ত অমুকম্পা করিয়া যে অক্ষম ব্যক্তিকে এই মাননীয় জনসাধারণের সম্মুখে দণ্ডায়মান হইতে সাহসী করিয়াছেন, সেই ব্যক্তি যদি সেই শ্রদ্ধালব্ধ অনুকম্পার অপব্যবহারে প্রবৃত্ত হইয়। দুঃসাধ্য সামাজিক ব্যাধির প্রতিকার সম্বন্ধে গম্ভীরভাবে উপদেশ দিতে প্রস্তুত হয়, তাহ হইলে তাহার অহম্মুখত হয়ত মার্জনীয় বলিয়া বিবেচিত হইবে না। কিন্তু যদি পূৰ্ব্ব হইতেই অপরাধ স্বীকার করিয়া লইয়৷ এই অপকার্য্যে প্রবৃত্ত হই, তাহা হইলে আমার পরম সহিষ্ণু শ্রোতৃমহোদয়গণ ক্ষমার জন্য কতকটা প্রস্তুত হইয়া থাকিবেন, এইরূপ ভরসা করিতে পারি। এবং শ্রোতৃবৃন্দ যখন স্বতঃপ্রবৃত্ত হইয়া অনুগ্রহ বর্ষণে উন্মুখ, তখন র্তাহাদের সহিষ্ণুতা পরীক্ষায় আমারও কতকটা অধিকার আছে,—ধরিয়া লইতে পারি। আলোচনায় প্রবৃত্ত হইয়াই দেখিতে পাই, আমাদের সমাজে সৰ্ব্বত্রই একটা নৈরান্তের আবির্ভাব হইয়াছে। আমরা বড় একটা আশা বুকে বাধিয়া এত কাল আশ্বস্ত ছিলাম, যেন সে আশা আমাদের চূর্ণ হইয়াছে। আমরা এত দিন ধরিয়া যাহার মুখ চাহিয়া ছিলাম, সে যেন আমাদিগকে ফেলিয়া গিয়াছে। এখন কেবল অতৃপ্ত বাসনার আর অপূর্ণ আকাঙ্ক্ষার বিষাদধ্বনি কোথাও অন্মুটভাবে কোথাও পরিস্ফুটভাবে সমুদগত হষ্টতেছে। এই আকালিক বিষাদের, এই নৈরাশ্বের মূল কি ? অধিক দিনের কথা নহে, বোধ করি পঞ্চাশ বৎসর পূৰ্ব্বে আমাদের ত এমন অবস্থা ছিল না। ষে আশালতা আজ ছিন্নমূল হইয়া ভূতলে লঙ্গিত হইতেছে, সেই আশালতার 8 جنسية