পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নানাকথা : সামাজিক ব্যাধি ও তাহার প্রতিকার סוףסי বলিতেছেন, ইহারা কেবলই চাকরি চাহিতেছে ও চাকরি না পাইলে সংবাদপত্র বাহির করিয়া দেশময় অসন্তোষের লীজ ছড়াইতেছে । রাজজাতীয়ের বলিতেছেন, ইহার শেতাঙ্গ দেখিলেই সেলাম করিতে চাহে না, ইহাদের এতটা নৈতিক অধঃপতন ঘটিয়াছে। পণ্ডিতেরা বলিতেছেন, ইহার এত কাল ধরিয়া বিজ্ঞানের বহি মুখস্থ করিল, অথচ ইহাদের মধ্যে একটা নিউটন জন্মিল না ; ইহাদের মস্তিষ্কের উপকরণ কেবল কাদা আর মাটি । সমাজসংস্কারকেরা বলিতেছেন, ইহারা এখনও বাল্যকালে বিবাহ করে, অথচ বলে—আমাদিগকে রাজনৈতিক অধিকার দাও, আমাদের টেক্স বাড়াইও না, আমাদিগকে বিনা দোষে জুতা মারিও না। কাজের লোকের বলেন, ইহার কেবল কবিতা লেখে ও উপন্যাস লেখে, দেশের ধনবৃদ্ধির দিকে ইহাদের চেষ্টা নাই। র্যাহার কাজের লোক নহেন, তাহারা বলেন, ইহাদের ধনতৃষ্ণা অত্যন্ত বাড়িয়াছে, কলেজের বাহির হইয়াই ইহার। সবম্বতীকে বিসর্জন দেয় ও অর্থের জন্য ঘুবিয়া বেড়ায়। ফলতঃ ত্রিশ বৎসর পূৰ্ব্বে বিশ্বজগৎ ভারত উদ্ধারের জন্য ষে শিক্ষিত সম্প্রদায়ের মুগের প্রতি চাহিয়াছিল, এখন একরকম সিদ্ধান্ত হইয়া গিয়াছে, সেই শিক্ষিত সম্প্রদায়ের মত অকৰ্ম্মণ্য, জরদগব মতযু সম্প্রদায় আর কোথাও নাই। পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রণালী যাহ। এ পর্য্যন্ত এ দেশে প্রচলিত ছিল, তাহ আর কোন সুফল প্রসব করিতে পারিবে না ; তাহ একরকম নিৰ্দ্ধারিত হইয়া গিয়াছে। বড় বড় রাজপুরুষ তাহাদের উচ্চ আসন হইতে শিক্ষিত সম্প্রদায়ের প্রতি ভ্ৰকুট-ভঙ্গী করিতেছেন। ইংরাজী সংবাদপত্রের সম্পাদকগণ শিক্ষিত সম্প্রদায়ের প্রতি ও শিক্ষণপ্রণালীর প্রতি নিয়ত হলাহল উদগার করিতেছেন। সার চার্লস ইলিয়ট বলিলেন, ইহারা মিল ও বার্ক পডিয়া রাজনীতির ঝঙ্কার শিখিয়াছে মাত্র , টাইমস পত্র বলিলেন, ইহার ইতিহাস পড়িয়া কেবল রাজদ্রোহ শিক্ষা করিতেছে। ঈগল পক্ষী তাহার চঞ্চুপুট ব্যাদান করিয়া নেটব দাড়কাক গুলাকে জানবাজার ষ্ট্রটের অশখবৃক্ষ হইতে তাড়াইয়া দিয়া তাহাদের কচকচি হইতে অব্যাহতি লাভ করিলেন। পালামেণ্টে আমাদের কালা নাইট ভবনগরী বলিলেন, এখন কিছু দিনের জন্য উচ্চশিক্ষা বন্ধ করিয়া ইহাদিগকে জুতা সেলাই করিতে শিখাইলে দেশের শ্ৰীবৃদ্ধির একটা উপায় হইতে পারে । প্রকৃতপক্ষে ভারতবর্ষের শিক্ষিত সম্প্রদায় এখন কতকটা ধরার ভারস্বরূপ হইয়া পড়িয়াছেন। র্যাহার। র্তাহাদের পক্ষ হইয়া দুই একটা মিষ্ট কথা বলিতেছেন, র্তাহারা বস্তুতই আমাদের কৃতজ্ঞতাভাজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কন্‌বোকেশন উপলক্ষ্যে আমাদের মহামান্য রাজপ্রতিনিধি ও আমাদের অরুত্রিম হিতৈষী সার এণ্টনি ম্যাকৃডোনেল আমাদের এই দুদিনে শিক্ষিত সম্প্রদায়ের পক্ষে মিষ্ট কথা কহিয়া আমাদের কৃতজ্ঞত। লাভের অধিকারী হইয়াছেন। কিন্তু শিক্ষা-প্রণালীর যে সংস্কার আবশ্বক, তাহা একরকম সৰ্ব্ববাদিসম্মত হইয়া গিয়াছে, একটা ষে নূতন বন্দোবস্ত আবশ্বক, তাহ স্থির সিদ্ধান্ত হইয়াছে। কিন্তু সেই বন্দোবস্তটা কিরূপ হইবে, তাহাই এখন বিচারের ও বিতণ্ডার স্থল। নাসে মুনির্যন্ত মতং ন ভিন্ন ! মহাজনের পন্থাই এই সঙ্কটের স্থলে এক মাত্র পন্থা, কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্যক্রমে মহাজন একজন নহেন, বহু জন ; কাজেই