পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

to রামেন্দ্রকুমার রচনাসমগ্র 8ף כי পন্থার নির্দেশও কঠিন সমস্ত। ব্যাধি একটা কিন্তু চিকিৎসক অনেক , ঔষধের সংখ্যার সীমা নাই। এবং প্রত্যেক ঔষধই যেখানে অব্যর্থ, সেখানে পীড়িতের অবস্থা অত্যন্ত ভয়াবহ ও শোচনীয়। নমুনাস্বরূপ দুই একটা ব্যবস্থার উল্লেখ করিতে পারি। ইংরাজী শিক্ষা প্রবর্তনের সময়ে প্রাচ্য শিক্ষার বিরুদ্ধে যে যুক্তি প্রদর্শিত হইয়াছিল, বৰ্ত্তমান ইংরাজী শিক্ষাপ্রণালীর বিরুদ্ধেও সেই যুক্তি প্রযুক্ত হইতেছে। বর্তমান শিক্ষাপ্রণালীব বিরুদ্ধে একটা প্রধান অভিযোগ যে, ইহা অত্যন্ত লিটারারি ; ইহাতে বৈজ্ঞানিকতার সম্যক আদর নাই। , পূর্বেই বলিয়াছি, ভারতবাসীর ধাতুতে বৈজ্ঞানিকতার অত্যন্ত অভাব। ভারতবাসী পিতৃপিতামহক্রমে লিটারারি , আচাৰ্য্য ম্যাকৃসমূলর বলিয়াছেন, ভারতবাসী একবারে ফিলসফার হইয়া ভূমিষ্ঠ হয়েন। ভারতবাসী প্রত্যেকেই এক একজন শুকুদেব। শুকদেবের সংখ্যাবাহুল্য পারমার্থিক হিসাবে যতই প্রার্থনীয় হউক না, ব্যাবহারিক হিসাবে ততটা আশাপ্রদ নহে। কেন না, আমাদের ভারতবর্ষে দশ বৎসর অস্তর এক একটা "প্রবল ভিক্ষ উপস্থিত হইয়। জঠরজালাকে কিছু দিনের জন্য অত্যন্ত তীব্র করিয়া ব্যাবহারিক জগতের অস্তিত্বে বিশ্বাস অন্ততঃ কিছু দিনের জন্যও দূটাভূত করিয়া দেয়। এমন কি, যে সকল সংসারবিরক্ত সন্ন্যাসিগণ মাধুকরী বৃত্তি অবলম্বন করিয়া যেন-তেন সংসারযাত্রা নিৰ্ব্বাহ করেন, তাহাদের সেই মাধুকরী বৃত্তিতেও বিল্প উৎপাদন করিয়া আর একটা বৃত্তির অবলম্বনে বাধ্য করে, যাহার ফলে তাহাদিগকে সঙ্কীর্ণ সংসারকারাগার হইতেও সঙ্কীর্ণতর অন্যবিধ কারাগারে আশ্রয় লইতে হয়। যে বৈজ্ঞানিকত। ভারতবাসীর এই ফিলসফি-প্রবণতা ও কাব্য-প্রবণতা ও বৈরাগ্য-প্রবণতা কতকটা দমন করিয়া তাহাকে বৈষয়িক প্রবৃত্তি দিতে পারে, বর্তমান শিক্ষাপ্রণালীতে না কি সেই বৈজ্ঞানিকতার একান্ত অভাব। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান বন্দোবস্ত অনুসারে ছাত্রগণ বিজ্ঞানের গ্রন্থ প্রাণপণে কণ্ঠস্থ করিয়া পরীক্ষকগণের প্রযুক্ত যাবতীয় ব্ৰহ্মাস্থকে ফাঁকি দিতে সমর্থ হয় বটে, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তাহাদের মজ্জাতে ও ধাতুতে বিজ্ঞানের প্রতি আহ্বরক্তি জন্মায় না । আমাদের বিদ্যালয়সংযুক্ত ল্যাবরেটরিগুলিতে যে সকল ছাত্র অতি মনোযোগ সহকারে ব্যাটারি ও থার্মোমিটর লইয়! নাড়াচাড়া করে, পাচ বৎসর পরেই দেখিতে পাওয়া যায়, তাহাদের বৈঠকখানাব আলমারিগুলি পুরাতন ল-রিপোটের সারিতে স্নশোভিত হইয়াছে, এবং চাপকানের উপর চাদর ও মস্তকে শামলা পরিধান করিয় তাহার। নবীন কাণ্ডিকেয়ের ছায় বিকশিত হইয়া উঠিয়াছেন। চল্লিশ বৎসর হইল, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এ দেশের উচ্চশিক্ষার ভার গ্রহণ করিয়াছেন, কিন্তু এ পর্য্যস্ত এ দেশের লোকের বিজ্ঞানের প্রতি আছুরক্তি জন্মিল না। মাননীয় ডাক্তার মহেন্দ্রলাল সরকারের জীবনব্যাপী উদ্যম এখন কেবল সাংবৎসরিক নৈরাখের উচ্ছ্বাসে পরির্যক্ত হইতেছে। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সম্প্রতি বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য নূতন উপাধি প্রবর্তনের ব্যবস্থা করিয়াছেন। এখন হইতে আমাদের বিদ্যালয়ের ছাত্রেরা নামের পশ্চাতে নয়নানন্দকর অভিনব উপাধি সংযোগের অবসর পাইবে। কিন্তু এই নূতন ব্যবস্থায় বিজ্ঞানের প্রতি আমুরক্তি আমাদের ছাত্রসম্প্রদায়মধ্যে কত্ত