পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

Վ)ԳԵ- রামেন্দ্রম্বন্দর রচনাসমগ্র একটা আক্ষেপ উক্তি শুনিতে পাওয়া যায়। বুদ্ধিমানের অনেক ভাবিয়া চিন্তিয়া উপদেশ দেন, নীতিপুস্তকের সংখ্যা পাঠ্যমধ্যে বাডাইয়া দিলেই ছাত্রগণকে দুনীতি একবারে পরিত্যাগ করিবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ও একবার হুজুগে পড়িয়া নিয়ম করিয়াছিলেন, প্রবেশিকা পরীক্ষার সাহিত্যবিষয়ক পাঠ্য গ্রন্থে অন্ততঃ এত পাতা নীতিকথা থাকা চাই। কিন্তু গ্রন্থ পাঠ করিয়া সন্নীতির উৎকর্ষ বিধানে র্যাহার। আশা করেন, তাহারা নিতান্ত ভেলা বাহিয়া সাগর সস্তরণে প্রবৃত্ত হয়েন। গ্রন্থ পাঠ দ্বারা ধৰ্ম্মনীতির উৎকর্ষ হইবার সম্ভাবনা নাই । কিণ্ডারগার্টেন প্রণালীর নাম উল্লেখ করিলে আজিকার দিনে আমার অনেক বন্ধু হয়ত লগুড উত্তোলন করিবেন, কিন্তু তথাপি আমি বলিতে চাহি যে, নীতি শিক্ষারও একটা কিণ্ডারগার্টেন প্রণালী আছে । কেবল বস্তুতত্ত্ব শিখাইবার জন্যই কিণ্ডারগার্টেন প্রণালীতে ফল পাওয়া ষায়, এমন নহে ; শিক্ষা মাত্রেই এই প্রণালী ফুলোপধায়ক ; এমন কি, আমি বলিতে চাহি যে, শিক্ষা মাত্রেরই বোধ হয় এই এক মাত্র প্রণালী । যিনি ইংরাজা রচনা অভ্যাস করিতে চাহেন, তিনি দশ বৎসর কাল বেন সাহেবের ব্যাকরণ ও মরিস সাহেবের accidence অভ্যাস করিলেও ইংরাজী রচনায় নৈপুণ্য লাভ করিতে পরিবেন না , তাহাকে বাছিয়া বাছিয়া ভাল রচনা প্রচুর পরিমাণে পড়িতে হইবে, এবং স্বয়ং প্রচুর পরিমাণে ইংরাজী রচনা অভ্যাস করিতে হইবে। হাইড্রোজেন বায়ু স্বাদহীন, গন্ধহীন, বর্ণহীন, এইরূপ সারা বৎসর ধরিয়া মুখস্থ করিলেও ছাত্রদের হাইড্রোজেন কেবল একটা নিরাকার চৈতন্যস্বরূপ পদার্থ, এইরূপই একটা জ্ঞান জন্মিবে মাত্র, প্রকৃতপক্ষে হাইড্রোজেনের স্বরূপ জানিতে হইলে বোতল বোতল গ্যাস স্বহস্তে প্রস্তুত করিয়া অগ্নি প্রয়োগে জালাইতে হইবে। কিণ্ডারগার্টেন প্রণালী এই চোখে দেখিয়া হাতে লইয়া ঘাটিয়া নাডিয়া ভাঙ্গিয়া পোড়াইয়া দেখারই নামান্তর মাত্র। নীতি শিক্ষারও কিণ্ডারগার্টেন আছে ; শিক্ষকের কাছে কেবল নাতি সম্বন্ধে লেকৃচার শুনিলে চলিবে না ; শিক্ষককে নীতি সম্বন্ধে ডিমনষ্ট্রেশন দিতে হইবে। র্তাহাকে আপন গৃহস্বরূপ ও সমাজস্বরূপ ল্যাবরেটরিতে দাড়াইয়া সন্নীতির দৃষ্টান্ত দেখাইতে হইবে । ছাত্রের স্বচক্ষে সেই দৃষ্টান্ত দেখিবে ও ফল ভোগ করিবে ; শিক্ষক স্বয়ং ভাল কাজ করিয়া তজ্জাত আনন্দ উপভোগ করিবেন ও ছাত্রদের দ্বারা ভাল কাজ করাইয় তাহাদিগকে তাহার আননা উপভোগ করাইবেন । শিক্ষক স্বয়ং মিথ্যাচার ও অসদাচাৰু হইতে দূরবর্তী থাকিবেন ও আপনার ছাত্রগণকে মিথ্যাচার ও অসদাচার হইতে দূরে রাখিবেন। পরন্তু সহায়ভূতির ও স্নেহের ও প্রীতির বন্ধনে ছাত্রদিগকে আবদ্ধ রাখিয়া বেত্রের শাসন ও জরিমানার শাসন ও percentage এর শাসন অপেক্ষা এই বন্ধন যে কত অধিক ফলদায়ক, তাহা ছাত্রদিগকে আত্মজীবনে অনুভব করিবার শক্তি দিবেন। শিক্ষার দ্বারা যদি নীতির উৎকর্ষ সাধন সম্ভবপর হয়, তাহ এইরূপ শিক্ষার ফলে ; কেবল পাঠ্য পুস্তক মধ্যে নৈতিক উপদেশ কণ্ঠস্থ করিবার ফলে নহে । নীতিশিক্ষার এই কিণ্ডারগার্টেন প্রণালী মনে করিতে গেলেই আমাদের প্রাচীন কালের পুঞ্জন শিক্ষাপ্রণালী মনে আসে। সে এক কাল ছিল ; তখন গুরু-শিন্ধের মধ্যে দেীিনারী সম্বন্ধ প্রচলিত ছিল না ; তখন বেতনের পরিবর্ভে বিদ্যাবিক্রয় নিতান্ত