পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৩৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

" setz२ রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র করি ; তোমরা আমাদের আশ্রয়ে থাকিয়া সহস্র গুণ লাভ করিয়া থাক। তোমরা -শাস্তির অবসর পাইয়া পরিশ্রমের দ্বারা ধনের উৎপাদন করিতে পারিতেছ, ধনের সৃষ্টি করিতে অবসর পাইয়াছ । তোমরা সহস্র গুণ ধন উৎপাদন করিবে, আমাদিগকে একগুণ বেতনস্বরূপ দিবে না কেন ? আমরা কি পেটে না খাইয়া তোমাদের প্রহরীর কাজ করিব ও তোমাদের ঘরাও বিবাদের মধ্যস্থত। করিব ? আমরা নিরুত্তর হইয়া বলি, রাজপুরুষেরা, রাজকৰ্ম্মচারীরা তেমন অধিক লয়েন না বটে, কিন্তু এই ইংরাজ ব্যবসায়ীরা দেশের অনেক টাকা লইয়া যায়। ও পক্ষ হাসিয়া বলেন, অরে মূখ, নীলকর ও চাকরের শুভাগমনের পূর্বে এ দেশের মাটিতে নীলের ও চায়ের চাষ হইতে পারে, তাহা কয় জন লোকে জানিত ? ইংরাজ ব্যবসায়ীর আগমনের পূৰ্ব্বে এ দেশের লোক রাণীগঞ্জের মাটি খুড়িয়া কয় মণ কয়লা তুলিত ? আসামের জনশূন্য অরণ্যে হস্তী ভিন্ন তোমাদের মত হস্তিমূখ কতগুলি প্রতিপালিত হইত ? ইংরাজ ব্যবসায়ী ও ইংরাজ কুঠিয়াল আসিয়া এ দেশের ছাইমুঠোকে কড়িমুঠোয়, এ দেশের ধূলিমুষ্টিকে স্বর্ণমুষ্টিতে পরিণত করিয়াছে ; লৌহকে স্পর্শমণিসংযোগে কাঞ্চনে পরিণত করিয়াছে। যখন ইংরাজের জাহাজ এ দেশে আসে নাই, তখন চীনাম্যানের জন্য কত কোটি টাকার আফিম এ দেশের জমি হইতে উৎপন্ন হইত ? ভারতবর্ষে যে শস্যসম্পত্তির, রত্নসম্পত্তির কখনও অস্তিত্ব ছিল না, ইংরাজ আসিয়া সেই সম্পত্তির আবিষ্কার করিয়াছে। তাহার আবিষ্কৃত স্বেীপাজিত সম্পত্তির কতক ভাগ, সিংহের প্রাপ্য ভাগ, সে গ্রহণ করিবে, ইহাতে অন্যায় কি ? কিন্তু তোমাদিগকেও ত সে একবারে ফাকি দেয় না। কত লক্ষ লক্ষ কৃষক, কত লক্ষ লক্ষ কুলি মজুর ইংরাজ কুঠিয়ালের আশ্রয়ে প্রতিপালিত হইতেছে, তাহার সংবাদ রাখ কি ? ইহার উত্তর নাই। আমরা তখন অন্য পথে ঘুরিয়া উত্তর দিই,–কিন্তু তোমাদের দেশের শিল্পীর দৌরাত্ম্যে আমাদের দেশীয় শিল্প লোপ পাইতে চলিল, শিল্লিকুল নিরন্ন হইয়া পড়িল, তাহার কি ? প্রতিপক্ষ বলেন তোমাদের এ আবদার অসহ। এই অবাধ বাণিজ্যের ও স্বাধীন ব্যবসায়ের দিনে এ সকল আবদার শোভা পায় না। বুদ্ধির্যস্ত বলং তস্ত —উদ্যোগিনং পুরুষসিংহমুপৈতি লক্ষ্মী। তোমাদের শিল্পিগণ প্রতিযোগিতায় হঠে কেন ? তাহারা আমাদের মত কল কারখানা খুলিয়া আমাদের মত বুদ্ধি খাটাইয়া আমাদিগকে পরাস্ত করুক, তাহাতে কোন বাধা নাই। তাহারা সেই মান্ধীতার আমলের সনাতন মার্গ ত্যাগ করিবে না, অামারা তাহার কি করিব ? তোমরা অগ্রসর হইবে না বলিয়া আমরা ত আর পশ্চাতে ফিরিতে পারি না । আমরা স্বাধীন ব্যবসায় চাহি ; কাহাকেও বাধা দিতে চাহি না ; যাহার যেমন ক্ষমতা, সে তেমনই পন্থা দেখিয়া লউক । অকস্মাৎ একটা উত্তর দিবার অবকাশ পাইয়া আমরা আমনই বলিয়া উঠি—ঐ ত, ঐ অবাধ বাণিজ্যই , আমাদের সর্বনাশের মূল। আমাদের নিরশ্ন দেশের খাদ্য লাষী, আমাদের ধান গম তোমরা অবাধ ধাণিজ্যের নামে লইয়া j