পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৪০৮

$ p @ রামেন্দ্র মুন্দর রচনাসমগ্র গরিম সম্বন্ধে যতই তত্ত্বকথা উপদেশ দিন না কেন, এ দেশের শিক্ষার্থীর মধ্যে পৌনে যোল আনার পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বারস্থ হইবার এক মাত্র উদ্দেশ্য কোনরূপে জীবিকার সংস্থান। ইহা অত্যন্ত সত্য কথ, ইহা লুকাইবার কোন প্রয়োজন নাই। আমাদের দেশের বিদ্যার্থীরা সাহিত্য চাহে না, দর্শন চাহে না, তাহারা চাহে কেবল উদরান্ন । পৃথিবী গোলই হউক আর ত্রিকোণই হউক, পৃথিবী স্থিরই থাকুক, আর বন বন করিয়াই ধুরুক, চন্দ্র মৃৎপিণ্ড হউন বা স্বধাভাণ্ড হউন, ম্যাকবেথের রচনাকৰ্ত্তা শেকসপিয়র হউন আব নেপোলিয়ন বোনাপাটি হউন, পলাশীযুদ্ধের বিজেতা ক্লাইবই ইউন, আর চৈতন্য লাইব্রেবিব সম্পাদকই হউন, তাহাদেব তাহাতে কিছুই যায় আসে ন , তাহাদিগকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাপের প্রত্যাশায় দর্শন, বিজ্ঞান, সাহিত্য, যাহাই গলাধঃকরণ কর৩ে বলিবে, তাহাব তাহাই কবিতে সব্বদা প্রস্তুত আছে । এবং তাহারা যেরূপ সম্পূর্ণ নিষ্কামভাবে পূর্ণ বৈবাগ্যের সহিত দর্শন বিজ্ঞান সাহিত্যের বিবিধ মি%ান্ন, ৩ি ও'ম, পলান্ন, থেচরান্ন উদরস্থ কবে, তাহাতে তাহাদের অধ্যবসায়ের, তাহাদের সইফতার, তাহাদেব অনাসক্তির, তাহাদেব বৈবাগ্যেব, তাহাদেব বীরত্বের প্রশংসা না কবস থাকা যায় না। এধ আমব তাহাদিগকে কিছুতেই শেষ দতে পারি না। এই নিবম দেশেব দরিদ্র শিক্ষার্থী দর্শন বিজ্ঞানেব মাহাত্ম্য বুঝে না, কাব্যসাহিত্যের বসাস্বাধন কৰিতে জানে না, "বদ্যার জন্য বিদ্যাব গৌরব ? করিতে জানে না, ইত্যাদি দ ধ চন্দ কথা বলয়। র্যাহাব। বিদ্রুপ কবেন ও টিটকীবি দেন, তাহার। নিতান্তই হৃদয়হীন । তাহবি। যে উচ্চত্তব উদে্যুত লইয়৷ বিদ্যামনিবে প্রবেশ কবে না, তজ্জন্য তা9দিগকে উপহাস কবা নিতান্ত অমানুষেব কাজ । এবং যখন দেখিতে পাই যে, আমাদের অধিকাংশ দরিদ্র শিক্ষার্থী পরের নিকট ধার-কর জার্ণ গাউনে কথঞ্চিং শরীফ আধুত রাখিয়া ভাইস চ্যান্সেলাবের হস্ত হইতে কম্পিত হস্তে সাধেব ডিপ্লোমাখানি গ্ৰহণ ক1রয় মুহুর্তের জন্য উৎফুল্ল হয়, কিন্তু তাহার পর সেনেট হাউসের সোপানাবল। তাও ক্রম ক1রয়াই আপনাদের ভবিষ্যৎ জীবন আধার দেখে , যখন দেখতে পায়, তাহদের বৃদ্ধ পিতা মতে, তাহদের বিধবা পিসী মাসী, তাহীদের ক্ষুধাত্ত ভাই ভগিনী বড় আগ্রহের সহিত বহু বৎসর ধবিয় তাহাদের মুখ চাহিয়। পাসয় আছে, কিন্তু সেই আশা পূহণের বিশেষ কোন ভরসা নাই . যখন দেখিতে পাই, শতের মধ্যে পাঁচ জন মাত্র সংসারে প্রবেশ করিয়া কিঞ্চিৎ সফলত উপাজন করে, কিন্তু বাকী পচানব্বই জনকে অধম কেরাণীজীবন অথবা_ ভধপেক্ষা হীনতর অন্য কোন বৃত্তি আশ্রয় করিয়া প্রত্যহ শত অপমান নীরবে সহ করতে হয়, অপমানের আশ্রধারা তাহাধের গ গুদেশ দিয়। বিগলিত হক্টতে পারে না, কিথ লোকলোচনের আস্তরালে তাহাদের অভ্যন্তরে ক্ষরিত হইয়া তাহদের হৃদয়কে ক্লিন্ন করে, তাহাদের প্রাণকে জীর্ণ করে, তাহীদের অন্তরিক্রিয়কে অবসন্ন কবে ; এল' সে এই অপমান নীরবে সহ করে, কেবল নিজের জন্য নহে, পরের জন্য, পিত। মাতার জন্য, স্থা পুত্রের জন্য, ভাই ভগিনীর জন্য, নিরাশ্রয় মাসী পিসীর জন্য, তখন বলিতে ইচ্ছা হয়, ধৰ্ম্মপালনে যদি জ্ঞানার্জনের অপেক্ষ গৌরব থাকে, এবং গার্হস্থ্য ধৰ্ম্ম যদি মানবধৰ্ম্মের পরাকাষ্ঠা হয়, তবে হে বিধাতঃ, হে দেবদেব, দরিদ্র এই জীবগণকে তুমি দয়া করিও ।