পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৪৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নানাকথা ; আমিষ ভোজন g\నిరి জনসাধারণের উপর। কিন্তু তাহারা নিয়স্তা ও পরিচালক, কেহই স্রষ্ট। নহেন। এই সকল নিয়ম প্রকৃতির অঙ্গীভূত ; প্রাকৃতিক নিয়মে বিকাশ পাইয়াছে, বিকৃত হইতেছে, লয় পাইবে। কাজেই ব্রাহ্মণের চক্ষে এই সকল সামাজিক নিয়ম অর্থপূর্ণ ও মাহাত্ম্যে মণ্ডিত। সহস্ৰ যুগের অতীত ইতিহাস এই সকল সামাজিক নিয়মের শনৈ: শনৈঃ প্রতিষ্ঠা করিয়াছে। এই সকল নিয়মের সমষ্টি ধৰ্ম্ম । প্রকৃতির মহাযন্ত্রে যে নিয়ম, যে শৃঙ্খলা, যে ব্যবস্থা আছে, মানবসমাজের অন্তর্গত নিয়মসমষ্টি তাহার অন্তর্গত। ধৰ্ম্ম জগদ্বিধানের একটা ভাগ। মাধ্যাকর্ষণের উপর তোমার আমার হাত নাই , সামাজিক নিয়মের উপর আমাদের হাত নাই , ধৰ্ম্ম অনাদি ও সনাতন ও পুরাতন । আচার অনুষ্ঠান পরিবর্তনশীল, ধর্মের মুক্তি পরিবর্তনশীল, কিন্তু ধৰ্ম্ম পুরাতন । মাধ্যাকর্ষণে ব্যভিচার নাই, তথাপি পৃথিবী একত্র স্থির নাই। প্রাকৃতিক নিয়মে ব্যভিচার নাই, তথাপি ধরাপৃষ্ঠ যুগ ব্যপিয়া বিবিধ বিকারে বিবৃত হইয়াছে। সামাজিক নিয়মের ব্যভিচার নাই, ধৰ্ম্ম সনাতন, তথাপি আচার অনুষ্ঠান পরিবর্তনশীল, ধৰ্ম্মের মৃত্তি মহন্তের নিবট দেশকালভেদে বিভিন্ন। দেশকালভেদে নীতি, ইংরাজিতে যাহাকে মরালিটি বলে, তাহাও পরিবত্তিত হয়, দেশকালভেদে আচারও পরিবত্তিত হয়। মন্ত্রসস্তানের পুরাতন জ্ঞানসমষ্টিরূপী বেদমধ্যে ধৰ্ম্ম নিহিত আছে ; অভিজ্ঞতার বুদ্ধি সহকারে ধর্মের পরিসর বৃদ্ধি পাইতেছে । ব্রাহ্মণ একাধারে রক্ষণশীল ও উন্নতিশীল। অতীতের প্রতি ভক্তি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে কৰ্ষিত হইয়। ব্রাহ্মণের নিকট ফলপ্রস্থ হইয়াছে। কিন্তু সেই ভক্তি সমাজের গতি রুদ্ধ করে নাই । মন্থর সময় হইতে আরম্ভ করিয়া ব্রাহ্মণশাসিত সমাজ সনাতন ধৰ্ম্মের মাগে অব্যাহত ভাবে চলিয়াছে ; বিনা রক্তপাতে বিনা কোলাহলে প্রাচীন আচার প্রাগন অনুষ্ঠান ক্রমে পরিবর্তিত হইয়া আসিতেছে। যে ব্রাহ্মণকে উন্নতির বিরোধী বলে, সে ভারতবর্ষের ইতিহাস অধ্যয়ন করে নাই , সে পৃথিবীর অন্য দেশের ইতিহাস পড়ে নাই ; সে চক্ষু সত্ত্বে অন্ধ। কথাপ্রসঙ্গে বহু দূরে আসিয়া পড়িয়াছি। পাঠক মার্জন করিবেন । মনুষ্য অভাবে প্রকৃতির নিয়োগে জীবন রক্ষার জন্য চিরকাল পশুমাংস ভোজন করিয়া আসিতেছে। ইহাতে এক হিসাবে অধৰ্ম্ম নাই। আমাদের পূর্বপুরুষেরা সকল মহন্তের মতই নিৰ্ব্বিকারচিত্তে মাংস ভোজন করিতেন ; কেন না, তাহাই প্রকৃতির ব্যবস্থা, ংহই মানবের প্রাচীন ধৰ্ম্ম। দেবতার_প্রতির জন্য পশুবলি হইত ; পৃথিবীর মঞ্জর এই ইতিহাস; একেশ্বরবাদী ইহুদীরাও জেহোবার মন্দিরে বিবিধ প্রাণী asnকরিত। এই কারণে বৈদিক যজ্ঞে হিসার ব্যবস্থা। শতপূর্ণ ভারতভূমিতে কৃষিবৃত্তিপরায়ণ আৰ্যসন্তানের আর তেমন জীবহিংসার প্রয়োজন হয় নাই ; জীবের প্রতি দয়াবৃত্তির স্বাভাবিক নিয়মে বিকাশ হইয়াছিল। ধৰ্ম্মপ্রবৃত্তি অস্তঃকরণের নূতন ভাবের উদ্বোধন করিল। আশা করিতে পার, মনুষ্য বিজ্ঞানবলে একদিন এমন সি হইবে, যে দিন আর নিষ্ঠুর হিংসার প্রয়োজন হইবে না, সে দিন সমগ্র পৃথিবীতে অহিংসা পরম ধৰ্ম্ম বলিয়া গৃহীত হইবে। এখনও মঙ্গুষ্যের সে অবস্থা হয় নাই। মনুষকে জ্ঞানাভাবে ও শক্তির অভাবে অদ্যাপি প্রাচীন হিংসাবৃত্তি বা—২৮