পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৪৩৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নানাকথা : মাতৃমন্দির 8○○ যদি দল বাধিতে চাহেন, আমরাই বা দল না বাধিব কেন ? সকলেই যদি হাওয়ার অনুকূলে গা ঢালিয়া দেন, আমরাই বা বসিয়া থাকিব কেন ? আমাদের এই সাহিত্যসন্মিলনকে যদি কেহ গড্ডলিকা-প্রবাহের মত পরের অনুকরণজাত বলিয়া উপহাস করিতে চাহেন, তাহাতে আমরা কর্ণপাত করিব না। করিব না, কেন না, যে হাওয়ার বেগে নীয়মান হইয়া আমরা এখানে সমবেত হইয়াছি, তাহা বিধাতার প্রেরিত বলিয়াই অনেকের বিশ্বাস। সাত কোটি বাঙ্গালী একযোগে ফুৎকার দিয়া কখনই ইহা জন্মাইতে পারিত না। আমাদের বন্ধুগণ, র্যাহারা নানা স্থানে নানারূপ দল বাধিতেছেন, তাহারা সকলেই এক একটা কৰ্ম্মক্ষেত্র স্থির করিয়া লইয়াছেন। কেই লোকশিক্ষার ভার লইতেছেন, কেহ শিল্প শিক্ষার ভার লইতেছেন, কেহ কাপড়ের কল চালাইতেছেন, কেহ দেশের অন্ন বাহিরে না যায়, তাহার জন্য প্রাচীর গাথিবীর কল্পনা করিতেছেন, কেহ সরকারের নিকট রাজনৈতিক অধিকার আদায়ের জন্য ঘোট করিতেছেন, কেহ দল বাধিয়। সরকারের উপর গোসা করিয়া বসিয়া আছেন, কেহ বা হাতের কাছে কৰ্ম্ম না পাইয়া স্বরাজ স্থাপনের স্বপ্ন দেখিতেছেন। আমরা সাহিত্যসেবী, আমরা দল বাধিয়া কি করিব ? আমরা কৰ্ম্মক্ষেত্র কোথায় পাইব ? অামাদের কৰ্ম্মক্ষেত্র কিরূপ হইবে ? বলা বাহুল্য, আমাদের দলের সহিত অন্যান্য দলের একটু পার্থক্য আছে। কোন শরীরী জড় পদার্থ লইয়া সাহিত্যের কারবার চলে না, অশরীরী ভাবপদার্থ লইয়৷ সাহিত্যের কারবার। আমরা ভাবের হাটে বেচা কেনা, লেনা দেনা করিয়া থাকি । আমাদের নিকট যাহার মূল্য অধিক, হাতে তাহ ধরা দেয় না, ছুইতে গেলে তাহা ধুয়ার মত ও বাম্পের মত হাত হইতে সরিয়া পড়ে। কঠিন ধরাপুষ্ঠে প। ফেলিয়া আমরা বিচরণ করি না ; আমরা পাখীর মত বায়ুমার্গে উড়িয়া বেড়াই । এই উড্ডয়ন কার্য্যে আমাদের আর কোন লাভ নাই ; লাভের মধ্যে কেবল আনন্দ । এই আনন্দের জন্যই আমাদের য। কিছু পরিশ্রম এবং যা কিছু চেষ্টা,এবং বলা বাহুল্য, এই পরিশ্রম স্বীকারে আমরা কুষ্ঠিত নহি । কেন না, এই চেষ্টাতেই আমাদের জীবনের সাফল্য । আমরা এই পার্থীর দল যে আজ নানা দিগেদশ হইতে হইতে সমাগত হইয়। এই ছায়ামগুপতলে ঘটা করিয়া পরামর্শ করিতে বসিয়াছি, আমাদের এই সভাভঙ্গ হইলে, তৎপরে আমরা কি করিব ? আমাদিগকে আবার ত উড়িতে হইবে, আমরা কোন পথে কোন দিকে উড়িব ? দেশের যে হাওয়া বহিয়াছে, সেই হাওয়ার গতি লক্ষ্য করিয়াই আমাদিগকে উড়িতে হইবে। প্রবাহেব অনুকূলে উড়িলেই স্থবিধা ; এবং সেই দিকে উড়িলেই আমাদের পরিশ্রমের ও লাঘব হইবে। কেবল দেখিতে হইবে, হাওয়ার গতিট। কোন, দিকে ? উহ। স্বপথে না বিপথে ? উহার টান একটা আশ্রয়ের দিকে, না কোন অকূল পাথারে আমাদিগকে নিক্ষিপ্ত করিয়া উহা আমাদের বিহঙ্গজীবনকে ব্যর্থ করিয়া দিবে ? সকল দেশেই এক এক সময়ে এক একটা নিদিষ্ট দিকে ঝড় বহে। কোন