পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৪৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SW* রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র ব্যবধানমধ্যে ভাগীরথীর পশ্চিমকৃলে রাঙ্গামাটির রঙ্গমৃত্তিকামধ্যে হুয়েং চ্যাং-বণিত সঙ্ঘারামের ভগ্নাবশেষ হয়ত নিহিত রহিয়াছে । মহারাজ হর্ষবৰ্দ্ধন তখন আর্য্যাবৰ্ত্তের চক্রবর্তী পদে আসীন আছেন। গৌড়েশ্বর গুপ্তরাজা তাহার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার হত্যা সাধন করিয়া সেই চক্রবর্তী রাজার, ক্রোধানল জালিয়া দিয়াছিলেন । গুপ্ত নরপতির। বৈদিক প্রথার প্রবর্তক ছিলেন, তাহাদের রাজ্যকালে ব্রাহ্মণ্যের পুনঃ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ চলিতেছিল। কিছুদিন পরেই দেখিতে পাই, বেদপন্থী ব্রাহ্মণ ও কায়স্থ বঙ্গের রাজসভায় আহূত হইয়া বঙ্গদেশে উপনিবিষ্ট হইতেছেন। বর্তমান বাঙ্গালী সমাজের ভিত্তিপত্তন আরম্ভ হইয়াছে। তার পরেই .পালরাজাদের অভু্যদয়। বাঙ্গলার ইতিহাসে এই একটা নূতন যুগ তখন দেশ জডিয়া একট। নূতন হাওয়া বহিতে আরম্ভ করিয়াছে। পুরাতন তখন ভাঙ্গিতেছে, উহার ভগ্নাবশেষের আবর্জন সেই যুগের হাওয়ায় দেশ জুড়িয়া ছড়াইয়। পডিয়াছে। সেই জঞ্জালের মধ্য হইতে মাল মশল্প সংগ্ৰহ করিয়া নূতনের গঠন চলিতেছে । এই যুগটা বস্তুতই অতি আজগুবি যুগ। চারি দিকেই তখন অদ্ভুত রসের বাহুল্য। পালরাজার। সৌগত শাসন মানিতেন । ব্রাহ্মণ্য র্তাহাদের সময়ে মাথা তুলিবার চেষ্টা করিয়াও সম্পূর্ণভাবে সফল হইতে পারিতেছে না। তখন ব্রাহ্মণ্যের সহিত বৌদ্ধ পন্থার দ্বন্দ্ব চলিতেছে। দ্বন্দ্বের মধ্যে সমন্বয়ের চেষ্ট আছে । উভয়ের সমন্বয়ের সঙ্গে সঙ্গে উভয়কে আশ্রয় করিয়া ও উভয়কে বিকৃত করিয়৷ তান্ত্রিকতা মাথা তুলিয়া উঠিয়াছে। নাথযোগীদের চেলার। তখন গৃহস্থের বাড়ী বাড়ী বুজরুকি দেখাইয় বেড়াইতেছে। যোগীর সিদ্ধ পুরুষ, তাহারা মাটীতে পা ফেলিয়। চলেন না, তাহার। গাছে চড়িয়। আকাশপথে দেশ ভ্রমণ করেন। বড় বড় বটের গাছ ও তালের গাছ তাহদের এয়ারশিপের কাজ করে। র্তাহার। মন্ত্র পড়িয়। জলের ছিটা দিব। মাত্র মানুষ অবলীলাক্রমে ভেড বনিয়া যায়। তখন হাডি গুরুর আদেশে রাষ্ট্রপতি রাজ্যসম্পং তাগ করিয়া অবলীলাক্রমে সন্ন্যাস গ্রহণ করেন । ধৰ্ম্মঠাকুরের ডোম পুরোহিতের সম্মুথে ব্রাহ্মণ মাথা হেঁট করিয়া চলেন। চণ্ডী দেবী ব্যাধের নিকট পসার জাহির করিয়া পূজা লইবার জন্য ব্যস্ত, চ্যাংমুডি বিষহরী চাদ সদাগরের সৰ্ব্বনাশ করিয়া মহাদেবের উপর জয় লাভ করেন। যে দেশে যে সময়ে ভবচন্দ্র রাজার গবচন্দ্র মন্ত্রী রাষ্ট্র শাসন করেন, সে দেশে সে সময়ে সকলই সম্ভবপর হয়। ব্রহ্ম, বিষ্ণু, মহেশ্বর তখন উলুকবাহন ধৰ্ম্মঠাকুরের তোষামোদ করিতে প্রবৃত্ত হন। চওঁীর আদেশে হনুমান, ধনপতি সদাগরের ডিঙ্গা ডুবাইবার আয়োজন করেন। মহৰ্ষি বশিষ্ঠ, সীতাপতি যাহার পদরেণু গ্রহণ করিয়া কৃতাৰ্থ হইতেন, র্যাহার ব্রহ্মবলের নিকট বিশ্বামিত্রের ক্ষত্রতেজ নিম্প্রভ হইয়াছিল, ধিনি ব্রহ্মার মানসপুত্র, তিনি আপনার প্রাচীন মহিমা ভুলিয়। গিয়া নৃতন করিয়া সিদ্ধিলাভের আকাঙ্ক্ষায় মহাচীন দেশে বুদ্ধদেবের শরণাপন্ন হন ; এবং সেই মহামুনির আদেশে মাতলামি ধরিয়া “উখায় চ পুনঃ পীত্ব পুনঃ পততি ভূতলে" এই উপদেশমতে বীরভূম জেলার রামপুরহাটের নিকট তারাপুর গ্রামে তারাপীঠের সম্মুখে গড়াগড়ি দিয়া অবশেষে সিদ্ধি লাভে সমর্থ হন। বশিষ্ঠ ঋষির যখন এই অবস্থা, তখন তিনি যে ভাষায় সঙ্কলিত ঋকৃ মন্ত্র দর্শন