পাতা:রামেন্দ্রসুন্দর রচনাসমগ্র প্রথম খণ্ড.djvu/৪৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রামদেবতা {m ሣርጭ ভুলেন নাই। অদ্য রাত্রিতে তিনি ময়ূরাক্ষীতীরে ব্রহ্মচারীর সমাধির উপর বসিবার জন্য অদৃশু ভাবে উপস্থিত হন। পূজক ব্রাহ্মণের প্রচলিত পদ্ধতিক্রমে উভয় দেবতার একসঙ্গে পূজা করেন। নিদাঘকালে তাত্মিক আচারে পূজা হয়। পূজার নিয়ম, সাধারণের অজ্ঞেয় ও অজ্ঞাত। পূজার পর মৎস্যসহ খেচুরি ভোগ। ভোগের যাবতীয় উপকরণ ভিক্ষাদ্বারা সংগ্ৰহ করিতে হয়। জমিদারের পক্ষের গোমস্ত। ভিক্ষার দ্রব্য লইয়া আগে হইতে উপস্থিত থাকেন। ভোগের পর জলকুমরির পাতা সেই অন্ন নদীজলে অর্পণ করে। ইহাতে নানা বিঘ্নের আশঙ্ক। থাকে—কোমবে কাছি বাধিয়া জলকুমরিকে নদীতে ছাড়িয়া দেওয়া হয়, নদীতীরে লোকে দডি ধরিয়া দাডায় । তিনি অন্নের হাডি মাথায় লইয়া জলে ডুব দেন ও তখনই অচেতন হইয় পড়েন। অচেতন হইতেই হইবে। তীরবর্তী লোকে দড়ি টানিয়া তাহাকে উপরে তোলে ও চৈতন্য সম্পাদন করে । পরদিন পুনরায় পালকি চাপিয়া সমারোহ সহকারে মন্দিরে প্রত্যাগমন করেন। এই দিন চৈত্রসংক্রান্তি। মন্দিরে আসিয়া পুনরায় স্বান পূজা হয় ; সাধারণে পূজা দেয় ও বহু ছাগশিশুর বলিদান হয়। সন্ধ্যার পূৰ্ব্বে ব্রতধারী সন্ন্যাসীর। আপন গ্রামের নিদিষ্ট জলাশয়ে স্নান করিয়া উত্তরী ত্যাগ করিয়া ব্ৰত সমাপন করেন। পূৰ্ব্বে এই দিন চড়ক হইত , এখন তাহ নিষিদ্ধ। অপর পৃষ্ঠায় [ আর্ট প্লেটে ]* জেমো ও উদ্ধারণপুব, উভয় স্থানের দেবমূৰ্ত্তির প্রতিরুতি দেওয়া হইল। গত অগ্রহায়ণ মাসে [ ১৩১৩ ] সাহিত্য-পরিষৎ পীযুক্ত পঞ্চানন বন্দোপাধ্যায় বি, এ মহাশয়কে ফটোগ্রাফার সমেত ঐ প্রদেশের স্থানীয় তথ্য সংগ্রহের জন্য পাঠাইয়াছিলেন–র্তাহারাই এই ফটোগ্রাফ তুলিয়া আনিয়াছেন। মহামহোপাধ্যায় শ্রযুক্ত সতীশচন্দ্র বিদ্যাভূষণ মহাশয়কে উভয় প্রতিকৃতি দেখান হইয়াছিল। তিনি নিম্নোক্ত মত প্রকাশ করিয়াছেন— “জেমোর রুদ্রদেবের মূৰ্ত্তি বস্তুতঃ শাক্যমুনি বুদ্ধদেবের মূত্তি। শাক্যমুনি পদ্মাসনে সমাধিমগ্ন অবস্থায় উপবিষ্ট :-পাশ্বে বোধিসত্ত্বগণ ও দেবগণ বর্তমান— পদ্মাসনের নীচে উপাসকের অবস্থিত। উপরে পালঙ্কের উপরে মহাপরিনিৰ্ব্বাণোন্মুখ বুদ্ধদেব শয্যাশায়ী। ইহাতেই প্রতিপন্ন হইতেছে যে, এই মূৰ্ত্তি বুদ্ধস্মৃত্তি । গলদেশে যজ্ঞ সূত্র বাতীত নাগোপবীতের চিহ্ন রহিয়াছে—সমাধিমগ্ন বুদ্ধদেব ও নাগবেষ্টিত ছিলেন, এইরূপ কিংবদন্তী আছে। ললাটে তৃতীয় লোচনের চিহ্ন আছে । এই তৃতীয় লোচনও সম্ভবত: নাগোপবীতবং উত্তরকালে অঙ্কিত হইয়া থাকিবে । বুদ্ধমুতি বহু স্থানে মহাদেবের মূৰ্ত্তিতে এইরূপে রূপান্তরিত হইয়াছেন । উদ্ধারণপুরের বিগ্রহ ভৈরবমূত্তি। বৌদ্ধ শাস্ত্রে ইহার নাম বজভৈরব, হিন্দুশাস্ত্রে চন্দ্রচূড় বা রুদ্রভৈরব। তাহার চারি হাত ; তিন চক্ষু, গলে নরমুণ্ডমালা ; এক হাতে বজ্ৰ ধরিয়া ডাকিনী পিশাচী প্রভৃতিকে শাসন করিতেছেন। অন্য তাতে পদ্মদল ; উদ্ধে সপফণা। উভয় পার্থে ভৈরবের শক্তি নারীমূত্তি। ভৈরবকে বেষ্টন করিয়া অগ্নিশিখা জলিতেছে ; পদ্মাসনের নীচে উপাসকের কম্পি" কলেবরে অবস্থিত ।” + ছবি সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি-প্রকাশক ।