পাতা:রায় দীনবন্ধু মিত্র বাহাদুরের জীবনী.djvu/১০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রায় দীনবন্ধু মিত্র বাহাদুরের জীবনী।

আগ্রহাতিশয্যের সহিত পঠিত হইয়াছিল। দ্বিতীয় বৎসরের “জামাই-ষষ্ঠী” যে সংখ্যক প্রভাকরে প্রকাশিত হয়, তাহা পুনর্মুদ্রিত করিতে হইয়াছিল। সেই সকল কবিতা যেরূপ প্রশংসিত হইয়াছিল, “সুরধুনী” কাব্য এবং “দ্বাদশ কবিতা” সেরূপ প্রশংসিত হয় নাই। তাহার কারণ সহজেই বুঝা যায়। হাস্যরসে দীনবন্ধুর অদ্বিতীয় ক্ষমতা ছিল। “জামাই-ষষ্ঠী” তে হাস্যরস প্রধান। সুরধুনী কাব্যে ও দ্বাদশ কবিতায় হাস্যরসের আশ্রয় মাত্র নাই। প্রভাকরে দীনবন্ধু যে সকল কবিতা লিখিরাছিলেন, তাহ পুনর্মুদ্রিত হইলে বিশেষরূপে আদৃত হইবার সম্ভাবনা।

 আমরা দেখিয়াছি, কোন কোন সংবাদপত্রে “কালেজীয় কবিতাযুদ্ধের” উল্লেখ হইয়াছে। তাহাতে গৌরবের কথা কিছু নাই, সে সম্বন্ধে আমি কিছু বলিব না। তৰুণ বয়সে গালি দিতে কিছু ভাল লাগে; বিদ্যালয়ের ছাত্রগণ, প্রায় পরস্পরকে গালি দিয়া থাকে। দীনবন্ধু চিরকাল রহস্যপ্রিয়, এজন্য এটী ঘটিয়াছিল।

 দীনবন্ধু প্রভাকরে “বিজয়-কামিনী” নামে একটী ক্ষুদ্র উপাখ্যান কাব্য প্রকাশ করিয়াছিলেন। নায়কের নাম বিজয়, নায়িকার নাম কামিনী। তাহার, বোধ হয়, দশ বার বৎসর পরে “নবীন তপস্বিনী” লিখিত হয়। “নবীন তপস্বিনী”র নায়কের নামও বিজয়, নায়িকাও কামিনী। চরিত্রগত, উপাখ্যান কাব্য ও নাটকের নায়ক নায়িকার মধ্যে বিশেষ প্রভেদ নাই। এই ক্ষুদ্র উপাখ্যানকাব্যখনি সুন্দর হইয়াছিল।

 দীনবন্ধু হেয়ারের স্কুল হতে হিন্দু কালেজে যান, এবং তথায় ছাত্রবৃত্তি গ্রহণ করিয়া কয় বৎসর অধ্যয়ন করেন। তিনি কালেজের একজন উৎকৃষ্ট ছাত্র বলিয়া গণ্য ছিলেন।

 দীনবন্ধুর পাঠাবস্থার কথা আমি বিশেষ জানি না, তৎকালে তাঁহার সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ পরিচয় ছিল না।