পাতা:রায় দীনবন্ধু মিত্র বাহাদুরের জীবনী.djvu/১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রায় দীনবন্ধু মিত্র বাহাদুরের জীবনী।

দীনবন্ধু নীল-দর্পণ হস্তে করিয়া জলমজ্জনোমুখ নৌকায় নিস্তব্ধে বসিয়া রছিলেন। এমন সময়ে হঠাৎ একজন সন্তরণকারীর পদ মৃত্তিকা স্পর্শ করিবায় সে সকলকে ডাকিয়া বলিল, “ভয় নাই, এ খানে জল অল্প, নিকটে অবশ্য চর আছে।” বাস্তব নিকটে চর ছিল, তথায় নৌকা আনীত হইয়া চরলগ্ন হইলে দীনবন্ধু উঠিয়া নৌকার ছাদের উপর বসিয়া রহিলেন। তখনও সেই আর্দ্র নীল-দৰ্পণ তাঁহার হস্তে রহিয়াছে। এই সময় মেঘনায় ভাঁটা বহিতেছিল; সত্বরেই জোয়ার আসিয়া এই চর ডুবিয়া যাইবে এবং সেই সঙ্গে এই জলপূর্ণ ভগ্ন তরি ভাসিয়া যাইবে, তখন জীবনরক্ষার উপায় কি হইবে, এই ভাবনা দাঁড়ী, মাঝি সকলেই ভাবিতেছিল, দীনবন্ধুও ভাবিতেছিলেন। তখন রাত্রি গভীর, আবার ঘোর অন্ধকার, চারিদিকে বেগবতীর বিষম স্রোতধ্বনি, ক্বচিৎ মধ্যে মধ্যে নিশাচর পক্ষীদিগের চীৎকার। জীবনরক্ষার কোন উপায় না দেখিয়া দীনবন্ধু একেবারে নিরাশ্বাস হইতেছিলেন, এমত সময় দূরে দাঁড়ের শব্দ শুনা গেল। সকলেই উচ্চৈঃস্বরে পুনঃ পুনঃ ডাকিবায় দূরবর্ত্তী নৌকারোহীরা উত্তর দিল, এবং সত্বরে আসিয়। দীনবন্ধু ও তৎসমভিব্যাহারীদিগকে উদ্ধার করিল।

 ঢাকা বিভাগ হইতে, দীনবন্ধু পুনর্ব্বার নদীয়া প্রত্যাগমন করেন। ফলতঃ নদীয়ার বিভাগেই তিনি অধিককাল নিযুক্ত ছিলেন; বিশেষ কার্য্য-নির্ব্বাহ জন্য তিনি ঢাকা বা অন্যত্র প্রেরিত হইতেন।

 ঢাকা বিভাগ হইতে প্রত্যাগমন-পরে দীনবন্ধু “নবীন তপস্বিনী” প্রণয়ন করেন। উহা কৃষ্ণনগরে মুদ্রিত হয়। ঐ মুদ্রণযন্ত্রটী দীনবন্ধু প্রভৃতি কয়েকজন কৃতবিদ্যের উদ্যোগে স্থাপিত হইয়াছিল, কিন্তু স্থায়ী হয় নাই।

 দীনবন্ধু নদীয়া বিভাগ হইতে পুনর্ব্বার ঢাকা বিভাগে প্রেরিত হয়েন। আবার ফিরিয়া আসিয়া উড়িষ্যা বিভাগে প্রেরিত হয়েন। পুনর্ব্বার নদীয়া বিভাগে আইলেন। কৃষ্ণনগরেই তিনি অধিক কাল