চেয়ে তার মধ্যে অনেক বিষয়ে গভীরতা আছে; সে-সব সম্প্রদায়ের যে সাহিত্য তাও শ্রদ্ধা করে রক্ষা করবার যােগ্য— কিন্তু ওরা ছােটোলােক।
সকল দেশেই নৃত্য কলাবিদ্যার অন্তর্গত, ভাব প্রকাশের উপায়রূপে শ্রদ্ধা পেয়ে থাকে। আমাদের দেশে ভদ্রসমাজে তা লােপ পেয়ি গেছে বলে আমরা ধরে রেখেছি, সেটা আমাদের নেই। অথচ জনসাধারণের নৃত্যকলা নানা আকারে এখনাে আছে— কিন্তু ওরা ছোটোলােক। অতএব ওদের যা আছে সেটা আমাদের নয়। এমন কি, সুন্দর সুনিপুণ হলেও সেটা আমাদের পক্ষে লজ্জার বিষয়। ক্রমে হয়তো এ-সমস্তই লােপ হয়ে যাচ্ছে; কিন্তু সেটাকে আমরা দেশের স্মৃতি বলেই গণ্য করি নে, কেননা বস্তুতই ওরা আমাদের দেশে নেই।
কবি বলেছেন, “নিজ বাসভূমে পরবাসী হলে।” তিনি এইভাবেই বলেছিলেন যে, আমরা বিদেশীয় শাসনে আছি। তার চেয়ে সত্যতর গভীরতর ভাবে বলা চলে যে, আমাদের দেশে আমরা পরবাসী—অর্থাৎ আমাদের জাতের অধিকাংশের দেশ আমাদের নয়। সে-দেশ আমাদের অদৃশ্য অস্পৃশ্য। যখন দেশকে মা ব’লে আমরা গলা ছেড়ে ডাকি তখনমুখে যাই বলি মনে মনে জানি, সে মা গুটিকয়েক আদুরে ছেলের মা এই করেই কি আমরা বাঁচব। শুধু ভােট দেবার অধিকার পেয়েই আমাদের চরম পরিত্রাণ?
এই দুঃখেই দেশের লােকের গভীর ঔদাসীন্যের মাঝখানে, সকল লােকের আনুকূল্য থেকে বঞ্চিত হয়ে, এখানে এই গ্রাম-কয়টির মধ্যে আমরা প্রাণ-উদ্বোধনের যজ্ঞ করেছি। যারা কোনাে কাজই করেন না তাঁরা অবজ্ঞার সঙ্গে জিজ্ঞাসা করতে পারেন, এতে কতটুকু কাজই বা হবে। স্বীকার করতেই হবে তেত্রিশ কোটির ভার নেবার যােগ্যতা