পাতা:রাশিয়ার চিঠি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

জোগান দিই সব কারখানাঘরে। সেখানে সেগুলো টিনের কৌটোয় মোড়াই হয়। এ ছাড়া বড়ো বড়ো খেত আছে সেখানে সব গমের চাষ। আট ঘণ্টা কার আমাদের খাটুনি, প্রত্যেক পঞ্চম দিনে আমাদের ছুটি। আমাদের প্রতিবেশী যে-সব চাষী নিজের খেত নিজে চষে, তাদের চেয়ে আমাদের এখানে অন্তত দুনো ফল উৎপন্ন হয়।

 “প্রায় গোড়াতেই আমাদের এই ঐকত্রিক চাষে দেড়-শ চাষীর খেত মিলিয়ে দেওয়া হয়েছিল। ১৯২৯ সালে অর্ধেক চাষী তাদের খেত ফিরিয়ে নিলে। তার কারণ সোভিয়েট কম্যুন্ দলের প্রধান মন্ত্রী স্ট্যালিনের উপদেশ আমাদের কর্মচারীরা ঠিকমতো ব্যবহার করে নি। তাঁর মতে ঐকত্রিকতার মূলনীতি হচ্ছে সমাজবদ্ধ স্বেচ্ছাকৃত যোগ। কিন্তু অনেক জায়গায় আমলারা এই কথাটা মনে না রাখাতেই গোড়ার দিকে অনেক চাষী ঐকত্রিক কৃষিসমন্বয় ছেড়ে দিয়েছিল। তারপরে ক্রমে তাদের মধ্যেকার সিকি ভাগ লোক আবার ফিরে এসেছে। এখন আগেকার চেয়ে আরো আমরা বল পেয়েছি। আমাদের দলের লোকের জন্যে নতুন সব বাসা, একটা নতুন ভোজনশালা, আর একটা ইস্কুল তৈরি আরম্ভ হয়েছে।”

 তারপরে সাইরীরিয়ার একজনচাষী স্ত্রীলোক বললে,“সমবেত খেতের কাজে আমি প্রায় দশ বছর আছি। একটা কথা মনে রেখো ঐকত্রিক কৃষিক্ষেত্রের সঙ্গে নারী-উন্নতিপ্রচেষ্টার ঘনিষ্ঠ যোগ আছে। আজ দশ বছরের মধ্যে এখানে চাষী-মেয়েদের বদল হয়েছে যথেষ্ট। নিজের উপর তাদের অনেক বেশি ভরসা হয়েছে যে-সব মেয়ে পিছিয়ে আছে,ঐকত্রিক চাষের যারা প্রধান বাধা, এরাই তাদের মন গড়ে তুলছে। আমরা মেয়ে-ঐকত্রিকরা দল তৈরি করেছি, তারা ভিন্ন ভিন্ন প্রদেশে ঘুরে বেড়ায়, মেয়েদের মধ্যে কাজ করে, চিত্তের এবং অর্থের উন্নতি সাধনে

২৮