পাতা:রাশিয়ার চিঠি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৭৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ককেশীয় প্রদেশ ভূতত্ত্ব-আলােচনার উপযুক্ত স্থান। সেখানে এই রকম পান্থ-শিক্ষালয় থেকে ভূতত্ত্ব সম্বন্ধে বিশেষ উপদেশ পাবার আয়ােজন আছে। যে-সব প্রদেশ বিশেষভাবে নৃতত্ত্ব-আলােচনার উপযােগী সে-সব জায়গায় পথিকদের জন্যে নৃতত্ত্ববিৎ উপদেশক তৈরি করে নেওয়া হয়েছে।

 গ্রীষ্মের সময় হাজার হাজার ভ্রমণেচ্ছু আপিসে নাম রেজেস্ট্রি করে। মে মাস থেকে আরম্ভ করে দলে দলে নানা পথ বেয়ে প্রতিদিন যাত্রা চলে—এক-একটি দলে পঁচিশ-ত্রিশটি করে যাত্রী। ১৯২৮ খ্রীষ্টাব্দে এই যাত্রীসংঘের সত্যসংখ্যা ছিল তিন হাজারের কাছাকাছি—২৯শে হয়েছে বারাে হাজারের উপর।

 এ-সম্বন্ধে য়ুরােপের অন্যত্র বা আমেরিকার সঙ্গে তুলনা করা সংগত হবে না; সর্বদাই মনে রাখা দরকার হবে যে, রাশিয়ায় দশ বছর আগে শ্রমিকদের অবস্থা আমাদের মতােই ছিল—তারা শিক্ষা করবে, বিশ্রাম করবে বা আরােগ্য লাভ করবে সেজন্যে কারাে কোনাে খেয়াল ছিল না,—আজ এরা যে-সমস্ত সুবিধা সহজেই পাচ্ছে তা আমাদের দেশের মধ্যবিত্ত ভদ্রলােকের আশাতীত এবং ধনীদের পক্ষেও সহজ নয়। তা ছাড়া শিক্ষালাভের ধারা সমস্ত দেশ বেয়ে একসঙ্গে কত প্রণালীতেই প্রবাহিত তা আমাদের সিবিল সার্বিসে-পাওয়া দেশের লােকের পক্ষে ধারণা করাই কঠিন।

 যেমন শিক্ষার ব্যবস্থা তেমনি স্বাস্থ্যের ব্যবস্থা। স্বাস্থ্যতত্ত্ব সম্বন্ধে সােভিয়েট রাশিয়ায় যে-রকম বৈজ্ঞানিক অনুশীলন চলছে তা দেখে য়ুরােপ আমেরিকার পণ্ডিতেরা প্রচুর প্রশংসা করছেন। শুধু মােটা বেতনের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পুঁথি সৃষ্টি করা নয়, সর্বজনের মধ্যে স্বাস্থ্য-বিজ্ঞানের প্রয়ােগ যাতে পরিব্যাপ্ত হয়, এমন কি এদেশের চৌরঙ্গী থেকে

৬৭