পাতা:রাশিয়ার চিঠি-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

যারা বহুদূরে থাকে তারাও যাতে অস্বাস্থ্যকর অবস্থার মধ্যে অযত্নে বা বিনা চিকিৎসায় মারা না যায় সেদিকে সম্পূর্ণ দৃষ্টি আছে।

 বাংলা দেশে ঘরে ঘরে যক্ষ্মা রােগ ছড়িয়ে পড়ছে—রাশিয়া দেখে অবধি এ প্রশ্ন মন থেকে তাড়াতে পারছি নে যে, বাংলাদেশের এই সব অল্পবিত্ত মুমূর্ষুদের জন্যে কটা আরোগ্যাশ্রম আছে। এ প্রশ্ন আমার মনে সম্প্রতি আরাে জেগেছে এইজন্যে যে, খ্রীষ্টান ধর্মযাজক ভারত শাসনে অসাধারণ ডিফিকলটিজ নিয়ে আমেরিকার লােকের কাছে বিলাপ করছেন।

 ডিফিকলটিজ আছে বই কি। একদিকে সেই ডিফিকলটিজের মূলে আছে ভারতীয়দের অশিক্ষা, অপরদিকে ভারতশাসনের ভূরিব্যয়িতা। সেজন্যে দোষ দেব কাকে। রাশিয়ার অন্নবন্ত্রের সচ্ছলতা আজও হয়নি, রাশিয়াও বহুবিস্তৃত দেশ, সেখানেও বহু বিচিত্র জাতির বাস, সেখানেও অজ্ঞান এবং স্বাস্থ্যতত্ত্ব সম্বন্ধে অনাচার ছিল পর্বতপ্রমাণ, কিন্তু শিক্ষাও বাধা পাচ্ছে না, স্বাস্থ্যও না। সেইজন্যেই প্রশ্ন না করে থাকা যায় না, ডিফিকলটিজটা ঠিক কোনখানে।

 যারা খেটে খায় তারা সােভিয়েট স্বাস্থ্যনিবাসে বিনাব্যয়ে থাকতে পারে, তা ছাড়া এই স্বাস্থ্যনিবাসের সঙ্গে সঙ্গে থাকে sanatorium আরােগ্যালয়। সেখানে শুধু চিকিৎসা নয়, পথ্য ও শুশ্রূষার উপযুক্ত ব্যবস্থা আছে। এই সমস্ত ব্যবস্থাই সর্বসাধারণের জন্যে। সেই সর্বসাধারণের মধ্যে এমন সব জাত আছে যারা য়ুরােপীয় নয় এবং য়ুরােপীয় আদর্শ অনুসারে যাদের অসভ্য বলা হয়ে থাকে।

 এই রকম পিছিয়ে-পড়া জাত, যারা য়ুরােপীয় রাশিয়ার প্রাঙ্গণের ধারে বা বাইরে বাস করে তাদের শিক্ষার জন্য ১৯২৮ খ্রীস্টাব্দের বজেটে কত টাকা ধরে দেওয়া হয়েছে তা দেখলে শিক্ষার জন্যে কী উদার প্রয়াস

৬৮