পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সপ্তম পরিচ্ছেদ
১১৩

“আহা বেচারা আমার দোষেই অকালে প্রাণ হারাইল! শেষে শত্রুর তাহাকে সমুদ্রে ডুবাইয়া মারিল! সংসারে আমার মুখের দিকে চাহিতে সে ভিন্ন আর যে কেহই ছিল না; এমন বিশ্বাসী, প্রভুভক্ত অনুচর আমি আর কোথায় পাইব? আমার বন্ধু, সখা, বয়স্য, আমার পরামর্শদাতা, সুহৃদ—এমন আর কে আছে? আমার জীবনের এক অংশ উজাড় হইয়া গেল! উঃ, কি কষ্ট! আমি কি কোন দিন স্বপ্নেও ভাবিয়াছিলাম, এমন করিয়া তাহাকে হারাইব?”।

 পূর্ব্বোক্তা স্পেনীয় রমণী হঠাৎ সেই কক্ষে প্রবেশ পূর্ব্বক মিঃ ব্লেককে অত্যন্ত বিমর্ষ দেখিয়া তাহার পাশে আসিয়া দাঁড়াইল; কোমলস্বরে জিজ্ঞাসা করিল, “আপনার অসুখ বাড়িয়াছে কি? আপনাকে এত কাতর দেখিতেছি কেন?”

 মিঃ ব্লেক বলিলেন, “না, আমার অসুখ বাড়ে নাই; আমার যে বন্ধুরা আসিয়াছিলেন, তাঁহাদের নিকট একটা বড় দুঃসংবাদ শুনিয়া . মনে অত্যন্ত আঘাত পাইয়াছি। আমার একটী স্নেরে পাত্রকে হারাইয়াছি। সে আমার পুত্রাধিক প্রিয়তম—একটি যুবক।”

 রমণী বলিল, “বড়ই দুঃখের কথা।”

 মিঃ ব্লেক বলিলেন, “আজ রাত্রেই আমি এখান হইতে চলিয়া যাইব। আমার বন্ধুরা আমাকে লইয়া যাইবার জন্যই এখানে আসিয়াছিলেন।”

 “তবে আপনার কিছু আহারের আয়োজন করি—” বলিয়া রমণী সেই কক্ষ পরিত্যাগ করিল।

 আহারের পর মিঃ ব্লেক একখানি গাড়ী আনাইয়া রমণীর, নিকট বিদায় গ্রহণ পূর্ব্বক তাহার গৃহ ত্যাগ করিলেন। রমণী অশ্রুপূর্ণ, লোচনে তাঁহাকে বিদায় দিল।