পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/২০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
রূপসী বোম্বেটে

সে পর্য্যন্ত আমি প্রতিহিংসা সাধনে নিবৃত্ত হইব না। তোমাদের সর্ব্বনাশ সাধনই আমার জীবনের একমাত্র ব্রত হইল। মনে করিও না—ইহা শোকাতুরা অসহায় যুবতীর নিস্ফল দম্ভ, ক্ষুব্ধা নারীর প্রলাপ মাত্র। আমি যাহা বলিলাম, শীঘ্র হউক বিলম্বে হউক, তাহা কার্য্যে পরিণত করিবই। এখন তোমরা আমার সম্মুখ হইতে দূর হও, আর মুহুর্ত্ত কাল এখানে বিলম্ব করিলে আমি তোমাদিগকে কুকুর লেলাইয়া দিব। তোমরা এক সপ্তাহ মধ্যে আমাদের বাড়ী ঘর দখল করিতে পার; দুই চারি দিনের মধ্যে আমি আমার এই শেষ আশ্রয় ত্যাগ করিয়া চলিয়া যাইব।”

 পিয়ারসন ও মর্টন নত মস্তকে এই তীব্র তিরস্কার শ্রবণ করিল, আমেলিয়ার কথা যে হইলে তাহারা উঠিয়া ধীরে ধীরে লগুড়াহত কুকুরের মত সেই স্থান ত্যাগ করিল।

 কর্ম্মচাকীরা প্রস্থান করিলে আমেলিয়া মাতার মৃত দেহের পাশে বসিয়া অনেকক্ষণ ধরিয়া কাঁদিলেন।

 যথা সময়ে জননীর মৃত দেহ সমাহিত করিয়া আমেলিয়া তাঁহার বৈষয়িক কাগজ-পত্র পরীক্ষা করিলেন, হিসাব-পত্র দেখিয়া তিনি স্পষ্ট বুঝিতে পারিলেন বিশ্বাসঘাতক কর্মচারীরা তাঁহার মাতার সর্ব্বস্ব নানা কৌশলে আত্মসাৎ করিয়াছে।

 আমেলিয়া কয়েক দিন পরে মেলবোর্ণ নগরে উপস্থিত হইয়া। একজন এটর্ণিকে সেই সকল হিসাবপত্র দেখাইলেন। এটর্ণি তাহা পরীক্ষা করিয়া বলিলেন, “মিস্‌ কার্টার আপনার বিশ্বাসঘাতক কর্মচারীরাই যে আপনাদের সর্ব্বস্বান্ত করিয়াছে, এ বিষয়ে কিছুমাত্র সন্দেহ নাই; কিন্তু তাহারা আইন বাঁচাইয়া কাজ করিয়াছে। তাহাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ করিয়া কোনও ফল হইবে না।”