পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০
রূপসী বোম্বেটে

একটি সুন্দরী যুবতীকে দেখিয়া সে মোহিত হইয়া আর দৃষ্টি ফিরাইতে পারিল না। সে মুগ্ধ নেত্রে যুবতীর মুখের দিকে চাহিয়া রহিল।

 যুবতী সেখানে একাকিনী দাঁড়াইয়া ছিলেন, রাইমার যে গুল্মের অন্তরালে বসিয়া তাঁহাকে দেখিতেছে, তাহা তিনি দেখিতে পান নাই। যুবতী চারিদিকে চাহিয়া অষ্ট্রীচ্‌ পাখীর পালকের একখানি পাখা খুলিয়া বায়ু সেবন করিতে লাগিলেন। পাখাখানি অতি সুন্দর, তাহার শিল্পনৈপুণ্যও অতি বিচিত্র। পাখার ম্যাণ্ডেলটি গজদন্ত নির্ম্মিত; গজদন্তের হণ্ডেল হীরামুক্তা খচিত।

 রাইমার দেখিল যুবতী, পাখাখানি নাড়িতে নাড়িতে তাহার হাণ্ডেলের নিম্নপ্রান্তে সন্নিবিষ্ট একটি স্প্রিং টিপিলেন, আর হ্যাণ্ডেলটির প্রান্তস্থিত একখানি ক্ষুদ্র গোলাকার ডালা খুলিয়া গেল! তখন যুবতী এক ছড়া বহুমূল্য হীরক হার তাহার মধ্যে নিক্ষেপ করিলেন। অনন্তর অন্য একটি স্প্রিং টিপিবামাত্র সেই হ্যাণ্ডেলের ডালা বন্ধ হইয়া গেল। তখন যুবতী পাখাখানি পূর্ব্ববৎ নাড়িতে নাড়তে বলরুমের অভিমুখে। প্রস্থান করিলেন।

 গুন্মান্তরালে বসিয়া এই ব্যাপার দেখিয়া রাইমারের বিস্ময়ের সীমা রহিল না। সে মনে মনে বলিল, “সুন্দরী, তুমি বড় বুদ্ধিমতী, কিন্তু আমার চোখে ধূলা দিতে পার নাই। তোমার ঐ পাখাখানার উপর আমাকে নজর রাখিতে হইবে। এই গজদন্তের হণ্ডেলের মধ্যে লক্ষমুদ্রা মূল্যের হীরক-হার লুকানো আছে, কে ইহা অনুমান করিবে? বোধ হয় যুবতী হার ছড়াটি হারাইবার ভয়ে ওখানে লুকাইয়া। রাখিয়াছে। হা, হা, বেচারা জানে না—উহার উপর ‘রাইমারের। নজর পড়িয়াছে।কিন্তু কে এ যুবতী? সন্ধান লইতে হইতেছে।”

 রাইমার উঠিয়া ধীরে ধীরে বলরুমের দিকে অগ্রসর হইল॥