পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রূপসী বোম্বেটে
৩৭

বলিয়া সম্বোধন করিল। সে বুঝিয়াছিল এখন তাহার জীবনের শুভাশুভ আমেলিয়ার অনুগ্রহের উপর নির্ভর করিতেছে।

 আমেলিয়া বলিলেন, “তুমি অঙ্গীকার ভঙ্গ কর নাই দেখিয়া সন্তুষ্ট হইলাম। আমার যে সকল কথা আছে তাহা এখানেই বলি শোন; “আমার কথা শেষ হইলে আমার মামা ও দলের অন্যান্য লোকের সহিত তোমার পরিচয় করাইয়া দিব।”।

 রাইমার বলিল, “আপনার অনুগ্রহের জন্য ধন্যবাদ। আপনার কি বলিবার আছে বলুন, আমি শুনি। আশা করি আমার ধূমপানে আপনার আপত্তি নাই।”

 আমেলিয়া বলিলেন, “আপত্তি কি?—তুমি আমার সিগারেট পরীক্ষা করিতে পার।”

 আমেরিয়া তাঁহার কারুকার্যখচিত সুন্দর ‘সিগারেট কেশ’টি সহাস্যে রাইমারের দিকে প্রসারিত করিলেন। রাইমার একটি সিগারেট বাহির করিয়া মুখে গুঁজিল।

 তখন নাবিকেরা জাহাজের অন্য দিকে কাজ করিতেছিল, নিকটে অন্য কেহ ছিল না। আকাশ সুনীল, রবিকর-প্রদীপ্ত সমুদ্র-জল যেন হিরণ-কিরণে অনুরঞ্জিত, অব্যাহত সমীরণ-প্রবাহ শুভ্র ক্যাম্বিসের পর্দ্দা কম্পিত করিতেছিল। দূরে দূরে ছোট ছোট নৌকাগুলি পাল তুলিয়া লীলাভঙ্গে সমুদ্রের তুরঙ্গের উপর নাচিতেছিল। জাহাজের চতুর্দ্দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিয়া রাইমার আমেলিয়ার বিপুল বিভবের পরিচয় পাইল। সে দরিদ্রের সন্তান, ঐশ্বর্য্যের জন্য তাহার হৃদয় চিরদিন লালায়িত, আমেলিয়ার সাহায্যে এক দিন সে এইরূপ ঐশ্বর্য্যের অধিকারী হইতে পারিবে,—এই উদ্দাম কল্পনায় তাহার হৃদয়ও সমুদ্রতরঙ্গান্দোলিত তরণীগুলির ন্যায়উদ্বেলিত আনন্দে নৃত্য করিতে লাগিল। সে