পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৫৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম পরিচ্ছেদ
৪৫

ঘোড়-দৌড়ের বাজীতে ও জুয়ায় সর্ব্বস্বান্ত হইয়া সেই অঞ্চল পরিত্যাগ পূর্ব্বক মেলবোর্ণ সহরে পলায়ন করেন এবং ‘পিটারসন’ এই ছদ্মনামে এক প্রকাণ্ড ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হন; তিনি সেখানেও কিছু ‘দাও’ মারিয়াছিলেন। পরে সেই ষড়যন্ত্র প্রকাশিত হওয়ায় তিনি রাজদ্বারে অভিযুক্ত হইলে, তাঁহার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারী ওয়ারেণ্ট বাহির হয়। তখন হাতে যে কিছু নগদ টাকা ছিল, তাহা লইয়া তিনি প্রাণভয়ে গোপনে দেশান্তরে। পলায়ন করিলেন; নিরুদ্দিষ্ট ‘পিটারসনের’ কেহ সন্ধান পাইল না।

 কিছু কাল অজ্ঞাতবাসের পর পিয়ারসনের হঠাৎ সাল্‌ভেরিটা রাজ্যে পদার্পণ করিলেন। ভাগ্যলক্ষ্মীর প্রসন্নতায় ক্রমে তিনি কিরূপে রাজ্যের প্রধান নায়কের পদ লাভ করিয়াছিলেন, সে কথা পূর্ব্বেই বলিয়াছি।

 সালভেরিটায় পিয়ারসন যে সকল উচ্চপদস্থ রাজকর্ম্মচারীকে বন্ধুরূপে লাভ করিয়াছিলেন, তাঁহাদের মধ্যে জেনারেল মেন্‌ডোজার নাম বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। আমরা যে সময়ের কথা বলিতেছি, সেই সময় জেনারেল মেন্‌ডোজা লণ্ডনে সালভেরিটা রাজ্যের রাজদূতের কর্ম্মে নিযুক্ত ছিলেন। জেনারেল মেন্‌ডোজার একটি পরমাসুন্দরী অবিবাহিতা কন্যা ছিল; সকলেই শুনিয়াছিল জেনারেল মেন্‌ডোজা প্রেসিডেণ্ট পিয়ারসনের হস্তে কন্যা-রত্ন সম্প্রদান করিয়া তাঁহার সহিত বন্ধুত্ব-বন্ধন দৃঢ়তর করিবেন। প্রেসিডেণ্ট পিয়ারসন এই যুবতীকে ভাল বাসিয়াছিলেন; যুবতী যেমন রূপবতী, তাঁহার পিতার সেইরূপ অগাধ সম্পত্তি। জেনারেল মেন্‌ডোজার অন্য সন্তানাদি ছিল না; তাঁহার যে সম্পত্তি ছিল, তাহার মূল্য পাঁচ কোটী মুদ্রা। জেনারেল মেন্‌ডোজার মৃত্যুর পর এই বিপুল অর্থ তাঁহার জামাতার হস্তগত হইবে, পিারসন এ কথা জানিতেন। এই সকল