পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম পরিচ্ছেদ
৪৯

হইল না। আমেলিয়া স্বয়ং একখানি মোটর পরিচালিত করিতে লাগিলেন, রাইমার অন্যখানি লইয়া চলিল।

 রাত্রি এগারটার সময় মোটর দুইখানি নগরোপকণ্ঠে উপস্থিত হইল।

 প্রাসাদের পশ্চাতে একটি নিবিড় জঙ্গল ছিল; একটি জন-বিরল পথ দিয়া মোটর দুইখানি সেই জঙ্গলের নিকট লইয়া যাওয়া হইল।

 একটি উচ্চ পাহাড়ের উপর সাল্‌ভেরিটার রাজপ্রাসাদ নির্ম্মিত; তাহার চারি পাশে অন্য কোন ঘর বাড়ী ছিল না।

 মোটর দুইখানি দুই জন লোকের জিম্মায় রাখিয়া রাইমার অবশিষ্ট নাবিকগণকে সঙ্গে লইয়া সেই জঙ্গলের ভিতর দিয়া প্রাসাদের অভিমুখে অগ্রসর হইল, সকলেই নীরবে লঘু পদ-বিক্ষেপে চলিতে লাগিল।

 প্রাসাদ হইতে নগরে যাইবার পথের ধারে একটু ফাঁকা জমি ছিল; রাইমার অনুচরবর্গের সহিত সেই স্থানে আসিয়া মাটীতে শুইয়া পড়িল।

 অল্পক্ষণ পরে রাজপথ ঘোড়ার গাড়ীর চক্রশব্দে মুখরিত হইল। মন্ত্রণাসভার সদস্যগণ সভাভঙ্গে এই সকল গাড়ীতে প্রাসাদ হইতে গৃহে ফিরিতেছিলেন।—রাইমার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে চাহিয়া দেখিল, গাড়ীগুলি নগরের অভিমুখে দ্রুত, ধাবিত হইতেছে। শকটের আরোহীরা ভূতলশায়ী বোম্বেটেদের দেখিতে পাইলেন না।—অল্পক্ষণ পরেই চক্রধ্বনি নীরব হইল।

 শকট গুলি অদৃশ্য হইলে রাইমার ভূমি-শয্যা ত্যাগ করিয়া তাঁহার অনুচরগণকে, দুই দলে বিভক্ত করিল; এবং এক দলের অধিনায়ককে দুই একটি উপদেশ দিয়া কিছু দূরে পথের অন্য ধারে পাঠাইল।