পাতা:রেখা-দীনেশচন্দ্র সেন.djvu/২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৬ সেক্ষপীয়র বড় কি কালিদাস বড় ? গ্রহণ করিয়া কালিদাস-পুষ্প প্রস্ফুটিত হইয়াছে—তাহার প্রতিপর্ণে নবীন উজ্জ্বল বর্ণ। সেক্ষপীয়র পৃথিবীর কবি—কালিদাস স্বর্গের কবি। কারণ, নিৰ্ম্মল মন্দার কুসুম আর কোথায় ফুটে ? তেমন আনন্দ-লহরী আর কোথায় ছুটে ? সেই শোভন প্রতিরঞ্জিত দলে কত মাধুৰ্য্য ! এই বিশ্ব সংসার কলিদাসের চক্ষে কুসুম-উদ্যান । মক্ষিকা হইয়া কালিদাস ইহা হইতে মধু সঞ্চয় করিয়াছেন । ভ্রমর হইয়া উপমালহরী গুঞ্জন করিয়াছেন, নবেদিত চন্দ্র হইয়া কালিদাস সাহিত্যাকাশে হাসিয়াছেন ;--তেমন হাসিতে আর কে জানে ? যখন বাল্মীকির রামায়ণরূপ মহাবৃক্ষ হইয়াছিল, তখন বোঝা গিয়াছিল,-যদি এই তরুর ফুল হয়, তবে তাহা লইয়া দিগঙ্গনা হাসিবে । সে শোভা প্রকৃতি-পটে আর ধরিবে না । যদি ইক্ষুদণ্ডে ফুল ফোটে, যদি থর্জর বুক্ষে চন্দন তরুতে পুষ্প হয়, যদি পদ্ম-কুসুমের কণ্ঠে সংগীত সুধা হয়, তবে তাহার তুলনা কোথায় ? কালিদাস ইক্ষুদণ্ডের ফুল,—খর্জুর-চন্দন-তরুর অপূৰ্ব্ব পুষ্প, তাই কালিদাস অপার্থিব । সস্কুচিত শকুন্তলার সলজ্জ দিব্য লাবণ্য কি মধুর! কি হৃদয়গ্রাহী ! সেই যে দুষ্মন্তের চিত্ত চীনাংশুক-রচিত কেতুর ন্যায় পশ্চাৎ ধাবিত হইতেছে, অথচ বাধ্য হইয়। শরীর পুরোভাগে অগ্রসর হইতেছে ; সেই তপোবনবিহারিণীর স্বভাবজ রূপ মণ্ডনহীন হইয়াও শৈবাল-রম্য কমলিনীর ন্যায় দীপ্যমান হইতেছে, আর তদ্বিরহে কামের কুহুমশর এবং ইন্দুর শীতরশ্মি, বজ্রসারের ন্যায় রাজার হৃদয় বিদ্ধ করিতেছে ;–এ বিচ্ছেদ, এ প্রেমকাহিনী কত সুন্দর, চক্ষু ভরিয়া দেখ দেখি বিহারিণী পাৰ্বতী স্তনভিন্ধবহুল হই। স্ৰষ্ট