পাতা:রেখা-দীনেশচন্দ্র সেন.djvu/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রেখা । 9) লেন, এইরূপ এক-আধটু প্রকৃতির প্রতি কটাক্ষ-মাত্র অাছে। কিন্তু রামায়ণ যেরূপ কৰ্ম্মে মহান, কৰ্ম্মে ভয়ঙ্কর, কৰ্ম্মে সুন্দর, তেমনি তাহার পত্রে-পত্রে প্রকৃতির মোহন সুন্দর চিত্ৰপট অক্ষয় উজ্জল রেখায় অঙ্কিত। কোথাও সরিৎ, সাগর ; কোথাও উজ্জলনক্ষত্রময় আকাশ ; কোথাও গহবর-পূর্ণ, হিমানীপূৰ্ণ বস্থধার ভিত্তি এক শৈল-চিত্রকূট ; কোথাও রুধির-প্রবাহ তুল্য গৈরিকনিশ্রবণ-বাহী স্রোতরাশি । ঐ নগোপকণ্ঠে পৃথিবীর কণ্ঠ-গতা মুক্তা-মালার দ্যায় আবৰ্ত্তশোভিনী মন্দাকিনী নদী—গুহা সমীরণগন্ধে আমোদিত, তদগর্ভে পুষ্প-সঞ্চয় বায়ু দ্বারা ধাবিত। রামায়ণ এই সব শোভায় শোভাময়। কখনও বাল্মীকির বীণা-তন্ত্রী সুমধুর ভৈরব-রবে সমুদ্র-বর্ণনা করিতে যাইয়া ফেণময় হাস্যপূর্ণ সরিৎ-পতির জীবন্ত প্রতিকৃতি তুলিতেছেন ; আশ্চৰ্য্য হইয়া, নক্ষত্ররত্ন-পূর্ণ আকাশকে রত্নাকরের সঙ্গে তুলনা দিয়া বলিতেছেন,—আকাশের উপমা সমুদ্র, আর সমুদ্রের উপমা আকাশ, উহাদের অন্ত উপমা নাই। উভয়েরই দিগন্তবিশ্রুত স্বর, উভয়েই স্বদূর বায়ুতে বিলীন। আকাশে মেঘের বেণী, সমুদ্রের আবর্ধময়ী উৰ্ম্মিরাশি বেণীকৃত ; নভশ্চর পক্ষী, সমুদ্রচর পক্ষী, অসীমপ্রসারে, অনন্তক্ষেত্রে উভয়েরই তুল্য আনন্দ। রামায়ণে এরূপ শোভা অসংখ্য ; আর ইলিয়াডে ইহার একটাও নাই। ইলিয়াড় খুজিয়া একটমাত্র পুষ্পের নাম পাইলাম ; একটা অধ্যায়ে, জোভ আর জুনোর মিলন-উপলক্ষে, হাইকান্থ-পুষ্পের নাম ভিন্ন, বোধ হয়, অন্ত কোন পুষ্পের নাম ইলিয়াডে নাই। কিন্তু ধরিত্রীর যত পুষ্প, বাল্মীকি সবটী সঞ্চয় করিয়াছেন ; ঝড়-অবসানে গিরি-সামুদেশে যেরূপ ক্রম-নিক্ষিপ্ত নানা পুষ্পরাশি ছড়াইয়া