পাতা:রেখা-দীনেশচন্দ্র সেন.djvu/৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রেখা । * ○ > রাধিক চলিয়া যাইত, তখন “হেন বাঞ্ছা হ’ত যে পাতিয়া দেই হিয়া”—আজ সে শোভা নাই ; গজযুথ-আলোড়িত নলিনীর ন্যায় যমুনা-তীর-শায়িতা রাধিকার আজ অন্তিম দশা দেখ । রাধিকা নীল মেঘ দেখিয়া ভ্রান্তি বশে আলিঙ্গন করিতে গিয়াছিলেন, বংশী বট দেখিয়া কৃষ্ণ-ভ্রমে সহচরীগণকে বলিয়াছিলেন ;– “ওই দ্যাপ্ত চরণে চরণ খুয়ে, ভুবনমোহন বেশে দাড়াইয়ে । আমার যে অঙ্গ হ’ল ভারি, আমি যে আর চলতে নারি।” এখন ভ্রম বুঝিয়া মৃত প্রায় রাধা বলিতেছেন,— “না পোড়া’ও মোর অঙ্গ না ভাসা’য়ো জলে, মরিলে রাখি ও বাধি তমালের ডালে । কবহু সে পিয়া যদি আসে বৃন্দাবনে, পরাণ পায়ব হাম পিয়া-দরশনে ৷” কোকিলের কুহু, ভ্রমর গুঞ্জন, কুন্দ-নীলাশোক-উৎপলাদি কুমের পঞ্চস্বর, সুন্দর চন্দ্র, বিরছিণী রাধাকে শক্ৰবৎ ব্যবহার করিতেছে ; কিন্তু যখন শ্রীহরি পুনরায় বৃন্দাবনকুঞ্জে আসিলেন, তখন রাধা শ্রীকৃষ্ণের পাশ্বে দাড়াইয়া বলিতেছেন,—জননীর অঞ্চল ধরিয়া যেন শিশু, প্রতিদ্বন্দ্বী সহচরকে ভয় দেখাইতেছে,— “সোহি কোকিল, অব লাখ ডাক ডাকয়ু, লাখ উদয় করু চন্দ, পাচ বাণ, অব লাখ বাণ হউ, মলয়-পবন বহু মন্দ ।”