পাতা:লক্ষটাকা - পাঁচকড়ি দে.pdf/৫৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

'8ાr লক্ষ টাকা এইরূপে অতি কষ্টে, অতি সাবধানে কড়া ধরিয়া ধরিয়া প্ৰায় এক ঘণ্টা পরিশ্রমের পর জয়বন্ত উপরে উঠিলেন। দেখিলেন, তখন সন্ধ্যা উত্তীর্ণ হইয়াছে-শোভনা প্ৰকৃতির মুখে কৃষ্ণাবগুণ্ঠন ৷ তিনি অত্যন্ত পরিশ্রাস্তু হঠয়াছিলেন, অবসন্নভাবে সেই অন্ধকারে নির্জনে বসিয়া পড়িলেন। মৃত্যুমুখ হইতে রক্ষা পাইলে মানুষের প্রাণে যে ভাব হয়, তাহা যিনি কখনও সে অবস্থায় না পড়িয়াছেন, তিনি তাহা বুঝিতে পারিবেন না । কিয়ৎক্ষণ তথায় বিশ্রাম করিয়া জয়বন্ত গাহের দিকে ফিরিলেন । পথে আসিতে আসিতে ভাবিলেন, “প্ৰথমে তুলসীর সম্মুখে যাইতে হুইবে ; দেখি, হঠাৎ আমাকে সে দেখিয়া কি করে ? সে জানে, আমি কুপের তিতিরেই আবদ্ধ আছি। অথবা পড়িয়াই মরিয়া গিয়াছি।” এই ভাবিয়া মনে মনে হাসিয়া জয়বন্ত হারকিষণ দাসের বাড়ীর পশ্চাদিকে যেখানে তুলসী বাঈ থাকিত, সেইদিকে আসিলেন। তাহার ঘরের জানালী উন্মুক্ত ছিল, তিনি দেখিলেন, ঘরে আলো জলিতেছে। উন্মুক্ত জানাল দিয়া আলোকশিখা বাহিরের অন্ধকার বক্ষে উজ্জ্বলভাবে প্রসারিত হইয়াছিল। জানালার পার্শ্বে গিয়া মাথা তুলিয়া জয়বন্ত দেখিলেন, তুলসী বাঈ চিন্তামগ্নভাবে বসিয়া আছে। জয়বন্ত জানালায় ঘা দিয়া একটা শব্দ করিলেন, আমনি তুলসী তাহার দিকে মুখ তুলিয়া চাহিল। তৎপর সে বিকট চীৎকার করিয়া বলিল, “ভূত-ভূত-ভূত—” তাহার চীৎকারে চারিদিক হইতে লোক সেইদিকে ছুটিয়া আসিল । জয়বন্ত ও সন্মুখদ্বারা দিয়া বাড়ীর ভিতরে প্রবেশ করিলেন। গোলযোগ শুনিয়া হারকিষণ দাসও অন্যান্যের ন্যায় তুলসী বাঈর বাড়ীর দিকে চলিলেন। সেখানে জয়বস্তকে দেখিয়া হারকিষণ দাস বলিলেন, “তুমি এতক্ষণ কোথায় ছিলে ? সন্ধ্যা হইতে আমি তোমাকে খুজিতেছি।”