পাতা:লক্ষণ সেন - দুর্গাদাস লাহিড়ী.pdf/২১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্রত্যক্ষ-দর্শনে । ২১৫ পিতামাতার সেবার জন্ত—সেইরূপ ব্যাকুল হইয় পড়িয়াছে। যেদিন আনন্দদেব উপদেশ দিয়াছিলেন,-“পিতামাতার চরণসেবাই ব্রহ্মচৰ্য্য-পিতামাতার সেবাই সন্ন্যাস ; সেই দিন হৃদয়ে যে তরঙ্গ উখিত হয়, এখন সেই তরঙ্গে জয়দেবের দেহ-প্রাণ উদ্বেলিত হইয়া উঠিয়াছে। জয়দেব ইষ্ট-সাধনায় বসেন, কৃষ্ণপ্রেমে বিভোর হইয়া পড়েন, অমনি যেন শ্ৰীভগবান সম্মুখে আসিয়া উপদেশ দেন,— পিতামাতার সেবাই এখন তোমার একমাত্র ইষ্টসাধন। তিনি ধ্যানে বসিয়াছেন, শ্ৰীহরির শ্ৰীচরণ চিন্তা করিতেছেন ; দেখিতেছেন,—ম-জননী সম্মুখে আবিভূতা। তিনি ভগবৎপাদপদ্মে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করিতেছেন ; কিন্তু দেখিতেছেন,— সে পুপাঞ্জলি মাতৃ-চরণে নিপতিত হইতেছে মনকে প্রতিনিবৃত্ত করিবার চেষ্টা পান, দৃষ্টি ফিরাইয়া লইবার আকাঙ্ক্ষা করেন, কিন্তু সে চেষ্টা—সে আকাঙ্ক্ষা সকলই ব্যর্থ হয়। জয়দেব রাধাকৃষ্ণের যুগল-মূৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠা করিয়াছিলেন। গভীর নিশীথে নিভৃতে বসিয়া যুগল-মূৰ্ত্তির অর্চনা করিতেছেন ; ডাকিতেছেন,-"হে কৃষ্ণ ! হে করুণাময় ! পাপীর উপায়বিধান করুন। একবার দেখা দেন ;-জীবন সার্থক করি।” ডাকিতেছেন, আর প্রেমাশ্র-প্রবাহে তাহার বক্ষঃস্থল পরিপ্লাবিত হইতেছে। পুনঃপুনঃ করুণ-প্রার্থনায় করুণাময় যেন আর নিশ্চিন্ত থাকিতে পারিলেন না। সহসা দিব্যালোকে গৃহ আলোকিত হইল। জয়দেব চাহিয়া দেখিলেন,—এখন আর সে মৃন্ময় মূৰ্ত্তি নাই! ভগবান এখন প্রত্যক্ষীভূত দিব্যমূৰ্ত্তি পরিগ্রহ করিয়াছেন।