পাতা:লক্ষণ সেন - দুর্গাদাস লাহিড়ী.pdf/২৭৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

স্নানের ঘাটে । २१> কহিলেন,-“ভক্ত ও যে, মুক্তও সে " তৃতীয় জন উত্তর দিলেন,-“যিনি সৰ্ব্বত্র সমদৰ্শী, তিনিই যুক্ত মহাপুরুষ। যাহার জ্ঞান সেই চরম অবস্থায় উপনীত হইয়াছে, যিনি ধূলায় ও স্বর্ণমুদ্রায় সমষ্টিসম্পন্ন, র্যাহার নিকট উচ্চনীচ ভেদাভেদ নাই,— তিনিই মুক্তির পথে অগ্রসর হইয়াছেন। ভেদজ্ঞানই ভ্রান্তি । ত্ৰান্তি বা মায়া-মোহ পরিত্যাগ করিতে না পারিলে,—সৰ্ব্বত্র অভিন্নভাব উপলব্ধি না হইলে –মুক্তি নাই।” বজরার মধ্যে উপবিষ্ট মহারাজ লক্ষ্মণ-সেনের কর্ণে সন্ন্যাসীদিগের কয়েকটা উক্তি প্রতিধ্বনিত হইল। ধূলায় ও কাঞ্চনে প্রভেদ নাই ; ভেদজ্ঞানই ভ্রান্তি; ভ্রান্তি বা মায়। পরিহার করিতে ন। পারিলে মুক্তির পথে অগ্রসর হওয়া যায় না ;—মহারাজ লক্ষ্মণ-সেনের হৃদয়-তন্ত্রীতে এই সুর বাজিয়া উঠিল। জনসজ্যের কোলাহলের অথবা অন্য কোনও কথার প্রতি মহারাজের কর্ণ আকৃষ্ট হইল না। সন্ন্যাসীদিগের মুখনিঃস্থত ঐ ভাবতরঙ্গনিচয় তাহার হৃদয়ে প্রবিষ্ট হইয়া হৃদয় আন্দোলিত করিয়া তুলিল। মহারাজ ভাবিতে লাগিলেন,—“চিরদিনই এই সকল কথা শুনিয়া আসিতেছি। কিন্তু হৃদয়ে স্থান পাইল কৈ ? কত কাল হইতে শুনিতেছি—‘টাকাও যা, ধূলাও তা।" কত কাল হইতে শুনিতেছি,—‘কাঞ্চনে ও ধূলি-মুঠিতে পার্থক্য নাই।’ কিন্তু এক কর্ণে শুনিতেছি, অন্য কর্ণ দিয়া সে ধ্বনি নিষ্কাসিত হইতেছে। হায়—ব্রান্তি ! সকলই তুমি বিস্মৃতির গর্ভে ডুবাইয়। রাখিয়াছ! সৰ্ব্বত্র সম-দৃষ্টি! কতবার মনে করিয়াছি,—সৰ্ব্বজীবে সৰ্ব্বজনে সমভাবে দর্শন করিব। কিন্তু কৈ, মনে হয় না তো—জীবনে এক দিনও সমদৰ্শিতার