পাতা:লালন-গীতিকা.djvu/৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা レo

left
center
right

বৃত্তাস্ত সম্বন্ধে শ্ৰীযুত বসন্তকুমার পাল মহাশয় রচিত ‘মহাত্মা লালন ফকির’ গ্ৰন্থখানির উল্লেখ করা যাইতে পারে। ডক্টর উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য মহাশয়ও তাহার ‘বাংলার বাউল ও বাউল গান’ গ্রন্থখানির মধ্যে বহু কিংবদন্তী, জনশ্রুতি ও প্রত্যক্ষদশীর বিবরণ বিচার করিয়া লালন ফকিরের জীবন-বৃত্তান্ত সম্বন্ধে সত্য নির্ধারণের প্রয়াস পাইয়াছেন । এইসব আলোচনা হইতে মোটামুটিভাবে আমরা জানিতে পারি, লালন ফকিরের জন্মস্থান তৎকালীন নদীয়া জেলার অন্তর্গত কুষ্ঠিয়া মহকুমার ভাড়ার গ্রাম। র্তাহার মৃত্যুর পরে স্থানীয় হিতকরী’ পত্রিকায় যে প্রবন্ধ প্রকাশিত হইয়াছিল তাহাতে জানা যায়, তিনি ১৮৯০ খ্ৰীষ্টাব্দে জীবন-লীলা সম্বরণ করেন ; মৃত্যুকালে র্তাহার বয়স ছিল ১১৬ বৎসর। লালন-ফকিরের দীর্ঘ জীবন সম্বন্ধে কুষ্ঠিয়া অঞ্চলে যে জনশ্রুতি শোনা যায় তাহাতে মনে হয় জীবৎকাল বিষয়ে এই বিবরণ সত্য। এই বিবরণ সত্য হইলে লালন ফকির ১৭৭৪ খ্ৰীষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। লালন জাতিতে হিন্দু কায়স্থ ছিলেন ; র্তাহার উপাধি ছিল কর, কোন কোন মতে দাস । শৈশবেই লালনের পিতৃ-বিয়োগ ঘটে । অতি অল্পবয়সে র্তাহার বিবাহ হইয়াছিল। অল্পবয়সেই তিনি পুরাধামে তীর্থ করিতে পায়ে হঁটিয়া চলিয়াছিলেন ; পথিমধ্যে তিনি বসন্তরোগে আক্রাস্ত হন ; দলের লোকেরা তাহাকে সেইভাবে পথে পরিত্যাগ করিয়া চলিয়া যান। এ-বিষয়ে অবশ্য অন্ত কিংবদন্তীও আছে। কেহ কেহ বলেন, র্তাহার অজ্ঞান-অবস্থায় সঙ্গিদল র্তাহাকে মৃত মনে করিল এবং তাহার মুখাগ্নি করিয়া গঙ্গার জলে র্তাহার দেহ ভাসাইয়া দিল । জলে ভাসিতে ভাসিতে তিনি একস্থানে গিয়া কুলে পৌছিলেন এবং চেতন লাভ করিলেন। ঘাটে একটি মুসলমান রমণী জল ভরিতে আসিলে তিনি তৃষ্ণায় জল চাহিলেন ; রমণীটি র্তাহার স্বামীকে ডাকিয়া আনিলেন ; স্বামি-স্ত্রী লালনকে ঘরে লইয়া গিয়া সেবা-শুশ্রুষা দ্বারা সুস্থ করিয়া তুলিলেন ; রোগে শুধু লালনের একটি চক্ষু নষ্ট হইয়া গেল । মোটের মাথায় বোঝা যায়, রোগাক্রান্ত লালন একটি