পাতা:লোকসাহিত্য - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ছেলেভুলানো ছড়ী X > ৰাইতেছে কোনোপ্রকার বাছ-বিচার নাই। যেন কবিত্বের সিংহদ্বারে নিস্তব্ধ শারদ মধ্যাহের মধুর উত্তাপে দ্বারবান বেটা দিব্য পা ছড়াইয়া দিয়া ঘুমাইয়। পড়িয়াছে। কথাগুলো ভাবগুলো কোনোপ্রকার পরিচয়-প্রদানের অপেক্ষ না রাখিয়া, কোনোরূপ উপলক্ষ অন্বেষণ না করিয়া, অনায়াসে তাহার পা ডিঙাইয়া, এমন-কি, মাঝে মাঝে লঘুকরম্পর্শে তাহার কান মলিয়া দিয়া, কল্পনার অভ্ৰভেদী মায়াপ্রাসাদে ইচ্ছাস্বথে আনাগোনা করিতেছে ; দ্বারবানটা যদি ঢুলিতে ঢুলিতে হঠাৎ একবার চমক খাইয়া জাগিয়া উঠিত তবে সেই মুহূর্তেই তাহারা কে কোথায় দৌড় দিত তাহার আর ঠিকানা পাওয়া যাইত না। যমুনাবতী সরস্বতী যিনিই হউন, আগামী কল্য যে তাহার শুভবিবাহ সে কথার স্পষ্টই উল্লেখ দেখা যাইতেছে। অবশু, বিবাহের পর যথাকলে কাজিতলা দিয়া যে র্তাহণকে শ্বশুরবাড়ি যাইতে হইবে সে কথা আপাতত উত্থাপন না করিলেও চলিত ; যাহা হউক তথাপি কথাটা নিতান্তই অপ্রাসঙ্গিক হয় নাই। কিন্তু বিবাহের জন্য কোনোপ্রকার উদযোগ অথবা সেজন্ত কাহারে! তিলমাত্র ঔৎসুক্য অাছে এমন কিছুই পরিচয় পাওয়া যায় না। ছড়ার রাজ্য তেমন রাজ্যই নহে। সেখানে সকল ব্যাপারই এমন অনায়াসে ঘটিতে পারে এবং এমন অনায়াসে না-ঘটিতেও পারে যে, কাহাকেও কোনো-কিছুর জগুই কিছুমাত্র দুশ্চিন্তাগ্রস্ত বা ব্যস্ত হইতে হয় না। অতএব আগামী কল্য শ্ৰীমতী যমুনাবতীর বিবাহের দিন স্থির হইলেও সে ঘটনাকে বিন্দুমাত্র প্রাধান্ত দেওয়া হয় নাই। তবে সে কথাটা আদৌ কেন উত্থাপিত হইল তাহার জবাবদিহির জন্যও কেহ ব্যস্ত নহে। কাজিফুল যে কী ফুল আমি নগরবাসী তাহা ঠিক করিয়া বলিতে পারি না, কিন্তু ইহা স্পষ্ট অনুমান করিতেছি যে যমুনাবতীনামক কন্যাটির আসন্ন বিবাহের সহিত উক্ত পুষ্পসংগ্রহের কোনো যোগ নাই। এবং হঠাৎ মাঝখান হইতে সীতারাম কেন যে হাতের বলয় এবং পায়ের নুপুর ৰুম ঝুম করিয়া নৃত্য আরম্ভ করিয়া দিল আমরা তাহার বিন্দু-বিসর্গ কারণ