পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম পরিচ্ছেদ।
১৩

সহকারিতরুতলে গিয়া দণ্ডায়মান হইলেন। তখন, প্রিয়ংবদা পরিহাস করিয়া কহিলেন, সখি! ঐ খানে খানিক থাক। শকুন্তল জিজ্ঞাসিলেন, কেন সখি? প্রিয়ংবদা কহিলেন, তুমি সমীপবর্ত্তিনী হওয়াতে, যেন সহকারতরু অতিমুক্তলতার সহিত সমাগত হইল। শকুন্তলা শুনিয়া ঈষৎ হাস্য করিয়া কহিলেন, সখি! এই নিমিত্তই তোমাকে প্রিয়ংবদা বলে।

 রাজা, প্রিয়ংবদার পরিহাসশ্রবণে সাতিশয় পরিতোষ লাভ করিয়া, মনে মনে কহিতে লাগিলেন, প্রিয়ংবদা যথার্থ কহিয়াছে; কেন না, শকুন্তলার অধরে নবপল্লবশোভার আবির্ভাব; বাহুযুগল কোমলবিটপশোভা ধারণ করিয়াছে, আর নব যৌবন, বিকসিতকুসুমরাশির ন্যায়, সর্ব্বাঙ্গ ব্যাপিয়া রহিয়াছে।

 অনসূয়া কহিলেন, শকুন্তলে! দেখ দেখ, তুমি যে নবমালিকার বনতোষিণী নাম রাখিয়াছ, সে স্বয়ংবরা হইয়া সহকারতরুকে আশ্রয় করিয়াছে। শকুন্তলা, শুনিয়া বনতোষিণীর নিকটে গিয়া, সহর্ষ মনে কহিতে লাগিলেন, সখি অনুসূয়ে! দেখ, ইহাদের উভয়েরই কেমন রমণীয় সময় উপস্থিত; নবমালিকা, বিকসিত নব কুসুমে সুশোভিত হইয়াছে, আর সহকারও ফলভরে অবনত হইয়া রহিয়াছে। উভয়ের এইরূপ কথোপকথন হইতেছে, ইত্যবসরে প্রিয়ংবদা হাস্যমুখে অনসূয়াকে কহিলেন, অনসূয়ে! কি নিমিত্ত শকুন্তলা সর্ব্বদাই বনতোষিণীকে উৎসুক