পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
শকুন্তলা।

সখি! আমারও এ বিষয়ে কৌতূহল জন্মিয়াছে; ভাল, জিজ্ঞাসা করিতেছি। এই বলিয়া, তিনি রাজাকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, মহাশয়! আপনকার মধুর আলাপ শ্রবণে সাহসী হইয়া জিজ্ঞাসিতেছি, আপনি কোন রাজর্ষিবংশ অলঙ্কৃত করিয়াছেন? কোন দেশকেই বা সম্প্রতি আপনকার বিরহে কাতর করিতেছেন? কি নিমিত্তই বা, এরূপ সুকুমার হইয়াও, তপোবন দর্শনপরিশ্রম স্বীকার করিয়াছেন? শকুন্তলা শুনিয়া মনকে প্রবোধ দিয়া কহিলেন, হৃদয়! এত উতলা হও কেন? তুমি যে জন্যে ব্যাকুল হইতেছ, অনসূয়া তাহাই জিজ্ঞাসা করিতেছে।

 রাজা শুনিয়া মনে মনে চিন্তা করিতে লাগিলেন, এখন কি রূপে আত্মপরিচয় দি; যথার্থ পরিচয় দিলে সকল প্রকাশ হইয়া পড়ে। এই বলিয়া, তিনি কিঞ্চিৎ ভাবিয়া কহিলেন, ঋষিতনয়ে! আমি এই রাজ্যের ধর্ম্মাধিকারে নিযুক্ত; পুণ্যাশ্রমদর্শনপ্রসঙ্গে এই তপোবনে উপস্থিত হইয়াছি। অনসূয়া কহিলেন, অদ্য তপস্বীদিগের বড় সৌভাগ্য; মহাশয়ের সমাগমে, তাঁহারা পরম পরিতোষ লাভ করিবেন। এইরূপ কথোপকথন চলিতে লাগিল। কিন্তু, পরস্পর সন্দর্শনে রাজা ও শকুন্তলা উভয়েরই মন চঞ্চল হইল; এবং উভয়েরই আকারে ও ইঙ্গিতে চিত্তচাঞ্চল্য স্পষ্ট প্রতীয়মান হইতে লাগিল। অনসূয়া ও প্রিয়ংবদা, উভয়ের ভাব বুঝিতে পারিয়া, রাজার অগোচরে শকুন্তলাকে সম্বোধন