পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম পরিচ্ছেদ।
২১

অগোচরে, প্রিয়ংবদাকে ভ্রূভঙ্গী ও অঙ্গুলিসঙ্কেত দ্বারা তর্জ্জন করিতে লাগিলেন। রাজা কহিলেন, বিলক্ষণ অনুভব করিয়াছ; তোমাদের সখীর বিষয়ে আমার আরও কিছু জিজ্ঞাস্য আছে। প্রিয়ংবদা কহিলেন, আপনি সঙ্কুচিত হইতেছেন কেন? যাহা ইচ্ছা হয়, সচ্ছন্দে জিজ্ঞাসা করুন। রাজা কহিলেন, আমার জিজ্ঞাস্য এই, তোমাদের সখী, যাবৎ বিবাহ না হইতেছে তাবৎ পর্যন্ত মাত্র, তাপসব্রত সেবা করিবেন, অথবা যাবজ্জীবন হরিণীগণ সহবাসে কালহরণ করিবেন। প্রিয়ংবদা কহিলেন, তাত কণ্ব সঙ্কল্প করিয়া রাখিয়াছেন, অনুরূপ পাত্র না পাইলে শকুন্তলার বিবাহ দিবেন না। রাজা শুনিয়া, সাতিশয় হর্ষিত হইয়া, মনে মনে কহিতে লাগিলেন, তবে আমার শকুন্তলালাভ নিতান্ত অসম্ভাবনীয় নহে। হৃদয়! আশ্বাসিত হও, এক্ষণে সন্দেহভঞ্জন হইয়াছে; যাহাকে অগ্নিশঙ্কা করিতেছিলে, তাহা স্পর্শসুখ শীতল রত্ন হইল।

 শকুন্তলা কৃত্রিম কোপ প্রদর্শন করিয়া কহিলেন, তানসূয়ে! আমি চলিলাম, আর আমি এখানে থাকিব না। অনসূয়া কহিলেন, সখি! কি নিমিত্তে? শকুন্তলা বলিলেন, দেখ, প্রিয়ংবদা মুখে যা আসিতেছে তাই বলিতেছে; আমি যাইয়া আর্য্যা গোতমীকে কহিয়া দিব। অনসূয়া কহিলেন, সখি! অভ্যাগত মহাশয়ের এ পর্যন্ত পরিচর্য্যা করা হয় নাই।