পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
শকুন্তলা।

সন্নিহিত মৃগয়াসহচরদিগকে মৃগয়াবেশ পরিত্যাগ করিতে আদেশ দিলেন। তদনুসারে তাহারা তথা হইতে প্রস্থান করিলে, রাজা ও মাধব্য, সন্নিহিত লতামণ্ডপে প্রবিষ্ট হইয়া, শীতল শিলাতলে উপবেশন করিলেন।

 এই রূপে উভয়ে নির্জনে উপবিষ্ট হইলে, রাজা মাধব্যকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, বয়স্য! তুমি চক্ষুর ফল পাও নাই, কারণ, দর্শনীয় বস্তুই দেখ নাই। মাধব্য কহিলেন, কেন তুমি ত আমার সম্মুখে রহিয়াছ। রাজা কহিলেন, তা নয় হে, আমি আশ্রমললামভূতা কণ্বদুহিতা শকুন্তলাকে উল্লেখ করিয়া কহিতেছি। মাধব্য, কৌতুক করিবার নিমিত্ত, কহিলেন, একি বয়স্য! তপস্বিকন্যায় অভিলাষ! রাজা কহিলেন, বয়স্য! পুরুবংশীয়েরা এরূপ দুরাচার নহে যে পরিহার্য্য বস্তুর উপভোগে অভিলাষ করে। তুমি জান না, শকুন্তলা মেনকাগর্ভসম্ভূতা, রাজর্ষি বিশ্বামিত্রের কন্যা; তপস্বীর আশ্রমে প্রতিপালিত হইয়াছে এই মাত্র, বস্তুতঃ তপস্বিকন্যা নহে।

 মাধব্য, শকুন্তলার প্রতি রাজার প্রগাঢ় অনুরাগ দেখিয়া, হাস্যমুখে কহিলেন, যেমন পিণ্ডখর্জ্জুর ভক্ষণ করিয়া রসনা মিষ্ট রসে অভিভূত হইলে, তিন্তিলীভক্ষণে স্পৃহা হয়, সেইরূপ স্ত্রীরত্বভোগে পরিতৃপ্ত হইয়া, তুমি এই অভিলাষ, করিতেছ। রাজা কহিলেন, না বয়স্য! তুমি তাকে দেখ নাই, এই নিমিত্ত