পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ।
২৯

এরূপ কহিতেছ। মাধব্য কহিলেন, তার সন্দেহ কি; যাহা তোমারও বিস্ময় জন্মাইয়াছে, সে বস্তু অবশ্য রমণীয়। কহিলেন, বয়স্য! অধিক আর কি বলিব, তার শরীর মনে করিলে মনে এই উদয় হয়, বুঝি বিধাতা প্রথমতঃ চিত্রপটে চিত্রিত করিয়া পরে জীবনদান করিয়াছেন; অথবা, মনে মনে মনোমত উপকরণসামগ্রী সকল সঙ্কলন করিয়া, মনে মনে অঙ্গ প্রত্যঙ্গ গুলি যথাস্থানে বিন্যাসপুর্ব্বক, মনে মনেই তাহার শরীর নির্মাণ করিয়াছেন; হস্ত দ্বারা নির্মিত হইলে, শরীরের সেরূপ মার্দ্দব ও রূপলাবণ্যের সেরূপ মাধুরী সম্ভবত না। ফলতঃ, ভাই রে, সে এক অভূতপূর্ব্ব স্ত্রীরত্নসৃষ্টি। মাধব কহিলেন, বয়স্য! বুঝিলাম, শকুন্তলা যাবতীয় রূপবতীদিগের পরাভবস্থান। রাজা কহিলেন, তাহার রূপ অনাঘ্রাত প্রফুল্ল পুষ্প স্বরূপ, নখাঘাতবর্জ্জিত নব পল্লব স্বরূপ, অপরিহিত নূতন রত্ন স্বরূপ, অনাস্বাদিত অভিনব মধু স্বরূপ, জন্মান্তরীণ পুণ্যরাশির অখণ্ড ফল স্বরূপ; জানি না, কোন ভাগ্যবানের ভাগ্যে সেই নির্মল রূপের ভোগ আছে।

 রাজার মুখে শকুন্তলার এইরূপ বর্ণনা শুনিয়া, চমৎকৃত হইয়া, মাধব্য কহিলেন, বয়স্য! তবে শীঘ্র তাহার পাণিগ্রহণ কর; দেখিও, যেন তোমার ভাবিতে চিন্তিতে এরূপ অসুলভরূপনিধান কন্যানিধন কোনও অসভ্য তপস্বীর হস্তে পতিত