পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ।
৩৫

কিছু দিন তপোবনে থাকি। মাধব্য কহিলেন, কেন, অন্য ছলের প্রয়োজন কি? তুমি রাজা, তপোবনে গিয়া তপস্বীদিগকে বল, আমি রাজস্ব আদায় করিতে আসিয়াছি; যাবৎ তোমরা রাজস্ব না দিবে, তারৎ আমি তপোবনে থাকিব। রাজা কহিলেন, তপস্বীরা সামান্য প্রজার ন্যায় রাজস্ব দেন না; তাঁহারা অন্যবিধ রাজস্ব দিয়া থাকেন; তাঁহারা যে রাজস্ব দেন, তাহা রত্নরাশি অপেক্ষাও প্রার্থনীয়। দেখ, সামান্য প্রজারা। রাজাদিগকে যে রাজস্ব দেয়, তাহা বিনশ্বর; কিন্তু তপস্বীরা তপস্যার ষষ্ঠাংশস্বরূপ অবিনশ্বর রাজস্ব প্রদান করিয়া থাকেন।

 রাজা ও মাধব্য উভয়ের এইরূপ কথোপকথন চলিতেছে, এমন সময়ে দ্বারবান্ আসিয়া কহিল, মহারাজ! তপোবন হইতে দুই ঋষিকুমার আসিয়া দ্বারদেশে দণ্ডায়মান আছেন, কি আজ্ঞা হয়। রাজা কহিলেন, অবিলম্বে লইয়া আইস। তদনুসারে ঋষিকুমারের রাজসমীপে উপনীত হইয়া, মহারাজের জয় হউক, বলিয়া, আশীর্বাদ করিলেন। রাজা আসন হইতে গাত্রোত্থানপূর্ব্বক প্রণাম করিলেন এবং জিজ্ঞাসিলেন, তপস্বীরা কি আজ্ঞা করিয়া পাঠাইয়াছেন, বলুন। ঋষিকুমারেরা কহিলেন, মহারাজ! আপনি এখানে আছেন জানিতে পারিয়া, তপস্বীরা মহারাজকে এই অনুরোধ করিতেছেন যে মহর্যি আশ্রমে নাই, এই নিমিত্ত নিশাচরেরা যজ্ঞের বিঘ্ন জন্মাইতেছে; অতএব আপনাকে,