পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৩৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩৮
শকুন্তলা।

না; এই বলিয়া কহিলেন, এখন আমি রাজার অনুজ হইলাম; রাজার অনুজের মত যাইতে ইচ্ছা করি। রাজা কহিলেন, আমার সঙ্গে অধিক লোক জন রাখিলে, তপোবনের উৎপীড়ন হইতে পারে; অতএব সমুদয় অনুচরদিগকে তোমারই সঙ্গে পাঠাইতেছি। মাধব্য শুনিয়া সাতিশয় আহলাদিত হইয়া কহিলেন, আজি আমি যথার্থ যুবরাজ হইলাম।

 এই রূপে মাধব্যের রাজধানী প্রতিগমন নির্দ্ধারিত হইলে, রাজা মনে মনে ভাবিতে লাগিলেন, এ অতি চপলস্বভাব, হয় ত শকুন্তলাবৃত্তান্ত অন্তঃপুরে প্রকাশ করিবেক; এখন কি করি; অথবা এইরূপ কহিয়া বিদায় করি; এই বলিয়া মাধব্যের হতে ধরিয়া কহিলেন, বয়স্য! ঋষিরা কয়েক দিনের জন্য তপোবনে থাকিতে অনুরোধ করিয়াছেন, এই নিমিত্ত রহিলাম, নতুবা যথার্থই আমি শকুন্তলালাভে অভিলাষী হইয়াছি এমন নয়; আমি ইতিপূর্ব্বে তোমার নিকট শকুন্তলাসংক্রান্ত যে সকল গল্প করিয়াছি, সে সমস্ত পরিহাসমাত্র, তুমি যেন যথার্থ ভাবিয়া একে আর করিও না। মাধব্য কহিলেন, তার সন্দেহ কি? আমি এক বারও তোমার ঐ সকল কথা যথার্থ ভাবি নাই।

 অনন্তর, রাজা তপস্বীদিগের যজ্ঞবিঘ্ননিবারণার্থে তাপে বনে প্রবিষ্ট হইলেন; এবং মাধব্যও, যাবতীয় সৈন্য সামন্ত ও সমুদয় অনুযাত্রিক সঙ্গে লইয়া, রাজধানী প্রস্থান করিলেন।