পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪০
শকুন্তলা।

করিব। সে যাহা হউক, এখন কোথায় গেলে শকুন্তলাকে দেখিতে পাই। বোধ করি, প্রিয়া মালিনীতীরবর্ত্তী শীতল লতামণ্ডপে আতপকাল অতিবাহিত করিতেছেন; সেই খানে যাই, তাঁহারে দেখিতে পাইব। এই বলিয়া তিনি, গ্রীষ্মকালের মধ্যাহ্ন সময়ে, সেই লতামণ্ডপের উদ্দেশে প্রস্থান করিলেন।

 এ দিকে, শকুন্তলাও, রাজদর্শনদিবসাবধি, দুঃসহ বিরহযাতনায় সাতিশয় কাতর হইয়াছিলেন; ফলতঃ, তাহার ও বাজার অবস্থার কোনও অংশে কোনও প্রভেদ ছিল না। সে দিবস শকুন্তলা অত্যন্ত অসুস্থ হওয়াতে, অনসূয়া ও প্রিয়ংবদা তাঁহাকে মালিনীতীরবর্ত্তী নিকুঞ্জবনে লইয়া গেলেন এবং তন্মধ্যবর্তী শীতল শিলাতলে, নব পল্লব ও জলার্দ্র পদ্মপত্র প্রভৃতি দ্বারা শয্যা, প্রস্তুত করিয়া, তাহাতে শয়ন করাইয়া, অশেষপ্রকার শুশ্রুষা করিতে লাগিলেন।

 রাজা, ক্রমে ক্রমে সেই নিকুঞ্জবনের সন্নিহিত হইয়া, চরণচিহ্নপ্রভৃতি লক্ষণ দ্বারা বুঝিতে পারিলেন, শকুন্তলা তথায় আছেন। তিনি কিঞ্চিৎ অগ্রসর হইয়া, লতার অন্তরাল হইতে শকুন্তলাকে অবলোকন করিয়া, যৎপরোনান্তি প্রীত হইয়া কহিতে লাগিলেন, আঃ! আমার নয়নযুগল শীতল হইল, প্রিয়ারে দেখিলাম। ইহারা তিন সখীতে কি কথোপকথন করিতেছে, লতাবিতানে ব্যবহিত হইয়া, কিয়ৎ ক্ষণ শ্রবণ ও