পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
শকুন্তলা।

লেন, অয়ি আত্মগুণাবমানিনি! কোন ব্যক্তি আতপত্র দ্বারা শরৎকালীন জ্যোৎস্না নিবারণ করিয়া থাকে? শকুন্তলা ঈষৎ হাস্য করিয়া পত্রিকারচনায় প্রবৃত্ত হইলেন, এবং কিঞ্চিৎ পরে কহিলেন, সখি! রচনা করিয়াছি, কিন্তু লিখনসামগ্রী কিছুই নাই, কিসে লিখি বল। প্রিয়ংবদা কহিলেন, এই পদ্মপত্রে লিখ।

 লিখন সমাপন করিয়া, শকুন্তলা সখীদিগকে কহিলেন ভাল শুন দেখি সঙ্গত হয়েছে কি না। তাঁহারা শুনিতে লাগিলেন; শকুন্তলা পড়িতে আরম্ভ করিলেন, হে নির্দয়! তোমার মন আমি জানি না, কিন্তু আমি তোমাতে একান্ত অনুরাগিণী হইয়া নিরন্তুর সন্তার্পিত হইতেছি—এই মাত্র শুনিয়া আর অন্তরালে থাকিতে না পারিয়া, রাজা সহসা সম্মুখে উপস্থিত হইলেন এবং শকুন্তলাকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, সুন্দরি! তুমি সন্তাপিত হইতেছ যথার্থ বটে; কিন্ত‌ু বলিলে বিশ্বাস করিবে না, আমি এক বারে দগ্ধ হইতেছি। অনমুয়া ও প্রিয়ংবদা, সহসা রাজাকে সমাগত দেখিয়া, যৎপরোনাস্তি হর্ষিত হইলেন এবং গাত্রোত্থানপূর্ব্বক, পরম সমাদরে স্বাগত জিজ্ঞাসা করিয়া বসিবার সংবর্দ্ধনা করিলেন। শকুন্তলাও, অত্যন্ত ব্যস্ত হইয়া, গাত্রোথান করিতে উদ্যত হইলেন।

 তখন রাজা শকুন্তলাকে নিবারণ করিয়া কহিলেন, সুন্দরি! গাত্রোত্থান করিবার প্রয়োজন নাই; তোমার দর্শনেই আমার