পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৪৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
শকুন্তলা।

হাস্যমুখে কহিলেন, যে কহিয়াছে সেই ক্ষমা প্রার্থনা করিবে, অন্যের কি দায়। তখন শকুন্তলা কহিলেন, মহারাজ! যদি কিছু কহিয়া থাকি, ক্ষমা করিবেন; পরোক্ষে কে কি না বলে। রাজা শুনিয়া ঈষৎ হাস্য করিলেন।

 এইরূপ কথোপকথন চলিতেছে, এমন সময়ে প্রিয়ংবদা লতামণ্ডপের বহির্ভাগে দৃষ্টিনিক্ষেপ করিয়া, কহিলেন, অনসূয়ে! মৃগশাবকটি উৎসুক হইয়া ইতস্ততঃ দৃষ্টিপাত করিতেছে; বোধ করি, আপন জননীর অন্বেষণ করিতেছে; আমি উহাকে উহার মার কাছে দিয়া আসি। তখন অনসুয়া কহিলেন সখি! ও অতি চঞ্চল, তুমি একাকিনী উহারে ধরিতে পারিবে না, চল আমিও যাই। এই বলিয়া উভয়ে প্রস্থানোন্মুখী হইলেন। শকুন্তলা উভয়কেই প্রস্থান করিতে দেখিয়া কহিলেন, সখি। তোমরা দুজনেই আমায় ফেলিয়া চলিলে, আমি এখানে এককিনী রহিলাম। তাঁহারা কহিলেন, সখি! একাকিনী কেন, পৃথিবীনাথকে তোমার নিকটে রাখিয়া গেলাম। এই বলিয়া, হাসিতে হাসিতে, উভয়ে লতামণ্ডপ হইতে প্রস্থান করিলেন।

 উভয়ে প্রস্থান করিলে, শকুন্তলা, সত্য সত্যই সখীরা চলি। গেল এই বলিয়া, উৎকণ্ঠিতার ন্যায় হইলেন। রাজা কহিলেন, সুন্দরি! সখীদের নিমিত্ত এত উৎকণ্ঠিত হইতেছ কেন? আমি তোমার সখীস্থানে রহিয়াছি; যখন যে আদেশ করিবে,