পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫২
শকুন্তলা।

হস্ত লইয়া মৃণালবলয় পরাইবার উদেযাগ করিতে লাগিলেন। শকুন্তলা একান্ত আকুলহৃদয় হইয়া কহিলেন, আর্য্যপুত্র! সত্বর হও, সত্বর হও। রাজা, আর্যপুত্রসম্ভাষণ শ্রবণে যৎপরোনান্তি হর্ষ প্রাপ্ত হইয়া, মনে মনে কহিতে লাগিলেন, স্ত্রীলোকেরা স্বামীকেই আর্য্যপুত্রশব্দে সম্ভাষণ করিয়া থাকে; বুঝি আমার মনোরথ পূর্ণ হইল। অনন্তর, তিনি শকুন্তলাকে সম্বোধন করিয়া কহিলেন, সুন্দরি! মৃণালবলয়ের সন্ধি সম্যক্ সংশ্লিষ্ট হইতেছে না; যদি তোমার মত হয়, অন্য প্রকারে সংযোজন করিয়া পরাই। শকুন্তলা ঈষৎ হাসিয়া কহিলেন, তোমার যা অভিরুচি।

 রাজা, নানা ছলে বিলম্ব করিয়া, শকুন্তলার হস্তে মৃণাল বলয় পরাইয়া দিলেন এবং কহিলেন, সুন্দরি! দেখ দেখ, কেমন সুন্দর হইয়াছে। শকুন্তলা কহিলেন, দেখিব কি, আমার নয়নে কর্ণোৎপলরেণু পতিত হইয়াছে, দেখিতে পাই না। রাজা ঈষৎ হাসিয়া কহিলেন, যদি তোমার মত হয়, ফুৎকার দিয়া পরিষ্কার করিয়া দি। শকুন্তলা কহিলেন, তাহা হইলে অত্যন্ত উপকৃত হই বটে, কিন্তু তোমায় অত দূর বিশ্বাস হয় না। রাজা কহিলেন, সুন্দরি! অবিশ্বাসের বিষয় কি? নূতন ভৃত্য কি কখনও প্রভুর আদেশের অতিরিক্ত করিতে পারে? শকুন্তলা কহিলেন, ঐ অতিভক্তিই অবিশ্বাসের কারণ। অনন্তর