পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
তৃতীয় পরিচ্ছেদ।
৫৩

রাজা, শকুন্তলার চিবুকে ও মস্তকে হস্ত প্রদান করিয়া, তাঁহার মুখকমল উত্তোলন করিলেন। শকুন্তলা, শঙ্কিতা ও কম্পিত হইয়া, রাজাকে বারংবার নিষেধ করিতে লাগিলেন। রাজা, সুন্দরি! শঙ্কা কি, এই বলিয়া শকুন্তলার নয়নে ফুৎকার প্রদান করিতে লাগিলেন।

 কিয়ৎ ক্ষণ পরে, শকুন্তলা কহিলেন, আর পরিশ্রম করিতে হইবেক না, আমার নয়ন পূর্ব্ববৎ হইয়াছে; আর কোনও অসুখ নাই। মহারাজ! আমি অত্যন্ত লজ্জিত হইতেছি; তুমি আমার এত উপকার করিলে, আমি তোমার কোনও প্রত্যুপকার করিতে পারিলাম না। রাজা কহিলেন, সুন্দরি! আর কি প্রত্যুপকার চাই? আমি যে তোমার সুরভি মুখকমলের আঘ্রাণ লাভ করিয়াছি, তাহাই আমার পরিশ্রমের যথেষ্ট পুরস্কার হইয়াছে; মধুকর কমলের আঘ্রাণমাত্রেই সন্তুষ্ট হইয়া থাকে। শকুন্তলা ঈষৎ হাসিয়া কহিলেন, সন্তুষ্ট না হইয়াই বা কি করে।

 এইরূপ কৌতুক ও কথোপকথন হইতেছে, এমন সময়ে, চক্রবাকবধূ! রজনী উপস্থিত, এই সময়ে চক্রবাককে সম্ভাষণ করিয়া লও; এই শব্দ শকুন্তলার কর্ণকুহরে প্রবিষ্ট হইল। শকুন্তলা, সঙ্কেত বুঝিতে পারিয়া, সাতিশয় শঙ্কিত হইয়া কহিলেন, মহারাজ! আমার পিতৃম্বসা আর্যা গৌতমী, আমার