পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চম পরিচ্ছেদ।
৭৫

করিয়া, এক্ষণে এরূপ দুর্বাক্য কহিয়া প্রত্যাখ্যান করা তোমার উচিত নহে।

 রাজা শুনিয়া কিঞ্চিৎ কোপাবিষ্ট হইয়া কহিলেন, ঋষিতনয়ে! যেমন বর্ষাকালীন নদী তীরতরুকে পাতিত ও আপনার প্রবাহকেও পঙ্কিল করে, সেইরূপ তুমি আমায় পতিত ও আপন কুলকেও কলঙ্কিত করিতে উদ্যত হইয়াছ। শকুন্তলা কহিলেন, ভাল, যদি তুমি, যথার্থই পরিণয়ে সন্দেহ করিয়া, পরস্ত্রীবোধে পরিগ্রহ করিতে শঙ্কিত হও, কোনও অভিজ্ঞান দর্শাইয়া তোমার শঙ্কা দুর করিতেছি। রাজা কহিলেন, এ উত্তম কল্প, কই কি অভিজ্ঞান দেখাইবে, দেখাও। শকুন্তলা রাজদত্ত অঙ্গুরীয় অঞ্চলের কোণে বাঁধিয়া রাখিয়াছিলেন; এক্ষণে ব্যস্ত হইয়া অঙ্গুরীয় খুলিতে গিয়া দেখিলেন, অঞ্চলের কোণে অঙ্গুরীয় নাই। তখন তিনি বিষণ্ণা ও ম্লানবদনা হইয়া, গৌতমীর মুখপানে চাহিয়া রহিলেন। গৌতমী কহিলেন, বোধ হয়, আল‍্গা বাঁধা ছিল, নদীতে স্নান করিবার সময় পড়িয়া গিয়াছে।

 রাজা শুনিয়া ঈষৎ হাসিয়া বলিলেন, স্ত্রীজাতি অত্যন্ত প্রত্যুৎপন্নমতি, এই যে কথা প্রসিদ্ধ আছে, ইহা তাহার এক উত্তম উদাহরণ।

 শকুন্তলা রাজার এইরূপ ভাব দর্শনে ম্রিয়মাণ হইয়া কহিলেন, আমি দৈবের প্রতিকূলতা বশতঃ অঙ্গুরীয়প্রদর্শনবিষয়ে