পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ।
৮৩

 এই বলিয়া, নগরপাল চৌকীদারকে হুকুম দিলে, চৌকীদার তাহাকে প্রহার করিতে আরম্ভ করিল। ধীবর কহিল, অরে চৌকীদার! আমি চোর নহি, আমায় মার কেন; আমি কেমন করিয়া এই আঙ্গটী পাইলাম বলিতেছি। এই বলিয়া, সে কহিল, আমি ধীবরজাতি, মাছ ধরিয়া বিক্রয় করিয়া জীবিকানির্বাহ করি। নগরপাল শুনিয়া কোপাবিষ্ট হইয়া কহিল, মর্ বেটা, আমি তোর জাতি কুল জিজ্ঞাসিতেছি না কি? এই অঙ্গুরীয় কেমন করিয়া তোর হাতে আসিল বল্। ধীবর কহিল, আজি সকালে আমি শচীতীর্থে জাল ফেলিয়াছিলাম। একটা বড় রুই মাছ আমার জালে পড়ে। কাটিয়া উহার পেটের ভিতর এই আঙ্গটী দেখিতে পাইলাম। তার পর এই দোকানে আসিয়া দেখাইতেছি, এমন সময়ে আপনি আমায় ধরিলেন; আর আমি কিছুই জানি না; আমায় মারিতে হয় মারুন, কাটিতে হয় কাটুন, আমি চুরি করি নাই।

 নগরপাল শুনিয়া আঘ্রাণ লইয়া দেখিল, অঙ্গুরীয়ে তামিষগন্ধ নির্গত হইতেছে। তখন সে সন্দিহান হইয়া চৌকীদারকে কহিল, তুই এ বেটাকে এই খানে সাবধানে বসাইয়া রাখ্। আমি রাজবাটীতে গিয়া এই সকল বৃত্তান্ত রাজার গোচর করি। রাজা সকল শুনিয়া যেমন অনুমতি করেন। এই বলিয়া, নগরপাল অঙ্গুরীয় লইয়া রাজভবনে গমন করিল; এবং কিয়ৎ