পাতা:শকুন্তলা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (১৮৭৫).pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ষষ্ঠ পরিচ্ছেদ।
৮৫

 এক দিবস, রাজার চিত্তবিনোদনার্থ, মাধব্য তাঁহাকে প্রমদবনে লইয়া গেলেন। উভয়ে শীতল শিলাতলে উপবিষ্ট হইলে, মাধব্য জিজ্ঞাসা করিলেন, ভাল বয়স্য! যদি তুমি তপোবনে শকুন্তলার পাণিগ্রহণ করিয়াছিলে, তবে তিনি উপস্থিত হইলে, প্রত্যাখ্যান করিলে কেন? রাজা শুনিয়া দীর্ঘ নিশ্বাস পরিত্যাগ করিয়া কহিলেন, বয়স্য! ও কথা আর কেন জিজ্ঞাসা কর? রাজধানী প্রত্যাগমন করিয়া, আমি শকুন্তলাবৃত্তান্ত এক বারে বিস্মৃত হইয়াছিলাম। কেন বিস্মৃত হইলাম, কিছুই বুঝিতে পারিতেছি না। সে। দিবস, প্রিয়া কত প্রকারে বুঝাইবার চেষ্টা করিলেন; কিন্তু আমার কেমন মতিচ্ছন্ন ঘটিয়াছিল, কিছুই স্মরণ হইল না। তাঁহাকে স্বেচ্ছাচারিণী মনে করিয়া, কতই দুর্বাক্য কহিয়াছি, কতই অবমাননা করিয়াছি। এই বলিতে বলিতে, নয়নযুগল অশ্রুজলে পরিপূর্ণ হইয়া আসিল; বাক‍্শক্তিরহিতের ন্যায় হইয়া, কিয়ৎ ক্ষণ স্তব্ধ হইয়া রহিলেন। অনন্তর, মাধব্যকে কহিলেন, ভাল আমিই যেন বিস্মৃত হইয়াছিলাম; তোমায় ত সমুদায় কহিয়াছিলাম, তুমি কেন কথাপ্রসঙ্গেও কোনও দিন শকুন্তলার কথা উত্থাপন কর নাই? তুমিও কি আমার মত বিস্মৃত হইয়াছিলে?

 তখন মাধব কহিলেন, বয়স্য! আমার দোষ নাই, তুমি