পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (অষ্টম সম্ভার).djvu/১১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শুভদ গঙ্গায় আগ্রীব নিমজ্জিত কৃষ্ণপ্রিয় ঠাকুরাণী চোখ কান রুদ্ধ করিয়া তিনটি ডুব দিয়া পিত্তল-কলসীতে জলপূর্ণ করিতে করিতে বলিলেন, কপাল যখন পোড়ে তখন এমনি করেই পোড়ে । ঘাটে আরো তিন-চারিজন স্ত্রীলোক স্নান করিতেছিল, তাহারা সকলেই অবাক হইয়া ঠাকুরাণীর মুখপানে চাহিয়া রহিল। পাড়ার্কুছলি কৃষ্ণঠাকুরুণকে সাহস করিয়া কোন একটা কথা জিজ্ঞাসা করা, কিংবা কোনরূপ প্রতিবাদ করা, যাহার তাহার সাহসে কুলাইত না । বিশেষতঃ যাহার ঘাটে ছিল তাহারা সকলেই তাহা অপেক্ষা বয়ঃকনিষ্ঠ । তাই বলচি বিন্দু, মানুষের কপাল যখন পোড়ে তখন এমনি করেই পোড়ে । যে ভাগ্যবতীকে উদ্দেশ করিয়া বলা হইল তাহার নাম বিন্দুবাসিনী । বি বড়লোকের মেয়ে, বড়লোকের বেী, সম্প্রতি বাপের বাট আসিয়াছিল । বিন্দু দেখিল কথাট তাহাকেই বল হইয়াছে, তাই সাহসে ভর করিয়া জিজ্ঞাসা করিল, কেন পিসিমা ? - এই হারাণ মুখুয্যের কপালটা পুড়ল ! ভগবান যেন ওদের মাথায় পা দিয়া ভুবুচ্চেন । বিন্দুবাসিনী বুঝল হারাণ মুখুযোদের দুরদৃষ্টের কথা হইতেছে । সেও দুঃখিত হইল। প্রায় একমাস হইল হারাণের পাচ-ছয় বৎসরের একটি ছেলের মৃত্যু হইয়াছিল । সেই কথা মনে করিয়া বলিল, ভগবান কেড়ে নিলে মানুষের হাত কি ? আর জন্ম-মৃত্যু কার ঘরে নেই বল । প্রথমে কথাটার অর্থ কৃষ্ণঠাকুরাণী ভাল বুঝিতে পারিলেন না । কিছুক্ষণ পরে বলিয়া উঠিলেন, আহা মাসখানেক হ’ল ছেলে মারা গেছে বটে । সে কথা নয় বিদু, সে কথা নয় ; মরা-বাচী ভগবানের হাতই বটে, কিন্তু এটা—তুই বুঝি কিছু শুনিসনি মা ? বিদুবাসিনী কিছু বলিল না, কেবল র্তাহার মুখপানে চাহিয়া রহিল। কৃষ্ণপ্রিয়া পুনশ্চ বলিলেন, হারাণ মুখুয্যের কথা বুঝি কিছু শুনিস নি ? 'S brリー>