পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (অষ্টম সম্ভার).djvu/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গুউদt বেলা হইতেছে দেখিয়া গৃহিণী উঠিয়া গেলেন, যাইবার সময় বলিলেন, ইনি শুনলে বড় রাগ করবেন । যাতে না শুনতে পান এমনি ক’রে যাব । নিশ্চয় শুনতে পাবেন । তুমি শোনালেই পাবেন। কিন্তু শুনলে বড় রাগ করবেন। বিন্দু অন্যমনস্কভাবে কহিল, বাপ-মা সন্তানের উপর রাগ করেন, আবার ভুলে যান, সেজন্য তুমি ভেবো না মা । ९ এ-স্থানটার নাম হলুদপুর । গ্রামটি যে জেলায় তাহা আর বলিয়া কাহাকেও ক্লেশ দিতে চাহি না, কারণ এস্থানে কাহাকেও কখন যাইতে হইবে না। এখানে দেখিবারও কিছু নাই, শুনিবারও কিছু নাই, তবে যদি নিতান্ত কৌতুহলী হইয়া থাকেন ত আমার বিবরণ পড়িয়া যতটা পারেন উপলব্ধি করিয়া লউন । শুনিয়াছি এ-গ্রামে পূৰ্ব্বে অনেক ধনবান ব্যক্তির নিবাস ছিল এবং তাহা সম্ভবও, কারণ একে ত ইহা গঙ্গার উপরে স্থাপিত, তাহার উপর বহুকালের দুই-চারিট জীর্ণ ভগ্ন শিবমন্দির বেতবন ও শুকুল ঝোপের মধ্যে অৰ্দ্ধ লুক্কায়িতভাবে মেনিব্রতধারী যোগী মূৰ্ত্তির মত বসিয়া আছে দেখিতে পাওয়া যায়। দুই-একটা ঘাট-বাধা পুষ্করিণীর মধ্যে গরু-বাছুর চরিয়া বেড়াইতেছে তাহাও চোখে পড়ে। এই সকল দেখিয়া গ্রামের চিরদিন যে এমনি অবস্থায় কাটে নাই তাহা অম্লমান হয়, কিন্তু এখন কেবল দশ-বিশ ঘর ব্রাহ্মণ কায়ন্থের বাটা, আর পঞ্চাশ-ষাট ঘর চাষা-ভূষার কুটীর আর জঙ্গল, এবং তাঁহারই মধ্যে দিয়া কদাচিৎ দুই-এক ব্যক্তির যাতায়াতের পায়ে-হাট পথ । এই গ্রামেই শ্ৰীযুক্ত হারাণচন্দ্র মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের বাট । বাটটি দ্বিতলপুরাতন ইষ্টক-নির্মিত। উপর তলায় দুটি এবং নিয়ে চারি-পাচটি ঘর । চতুর্দিকে একরাশ বঁাশ-ঝাড়, জুই-চারিটা কদলি-বৃক্ষের ঝাড়, গোটা-দুই বেলগাছ, গোটা-দুই আমগাছ, একটা কতবেল গাছ-ইহাই মুখোপাধ্যায় মহাশয়ের বাস্তুভিটা ও পার্থিব সম্পত্তি । হলুদপুরের অৰ্দ্ধক্রোশ দূরে বামুলপাড়ার জমিদার নন্দীদের জমিদারী সরকারে মুখুয্যে মহাশয় চাকুরি করিতেন। কুড়িটি টাকা মাহিনী পাইতেন, কিন্তু ইহাতেই &