পাতা:শরৎ সাহিত্য সংগ্রহ (অষ্টম সম্ভার).djvu/১৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শরৎ-সাহিত্য-সংগ্ৰহ বৃন্দাবন অভিমানভরে কহিল, তবে তাই ভাল মা । আমি যেমন আছি তেমনিই থাকি ; আমার বিয়ের জন্য তুমি আর পীড়াপীড়ি ক’রো না । বলিয়া সে অন্যত্র চলিয়া গেল । তখন হইতে তিন বৎসর অতিবাহিত হইয়াছে। ইহার মধ্যে বৃন্দাবনের জননী কুস্কমকে ঘরে আনিবার জন্য অবিশ্রাম চেষ্টা করিয়াছেন ; কিন্তু ফল হয় নাই— কুঙ্কমকে কোনমতেই সম্মত করান যায় নাই। কুস্কমের এত দৃঢ় আপত্তির দুটো বড় কারণ ছিল। প্রথম কারণ,—সে তাহার নিরীহ, অসমর্থ ও অল্পবুদ্ধি ভাইটিকে এক ফেলিয়া আর কোথাও গিয়াই স্কস্তি পাইতে পারে না । দ্বিতীয় কারণ–পূর্বেই বলিয়াছি । আর কোনরূপ সামাজিক ক্রিয়া না করিয়া সে যদি সহজে গিয়া স্বামীর ঘর করিতে পাইত, হয়ত এমন করিয়া তাহার সমস্ত দেহ-মন দাদার অনুরোধ ও পীড়াপীড়ির বিরুদ্ধে বাকিয়া দাড়াইত না । কিন্তু ঐ যে আবার কি-সব করিতে হইবে, রকমারি বেষ্টিমের দল আসিয়া দাড়াইবে, তাহার মায়ের মিথ্যা কলঙ্কের কথা, তাহার নিজের বাল্যজীবনের বিস্তৃত ঘটনা, আরও কত কি ব্যাপারের উল্লেখ হইবে, চেঁচামেচি উঠিবে, পাড়ার লোক কৌতুহলী হইয়া দেখিতে আসিবে, তাহার সঙ্গিনীদের সকৌতুক-দৃষ্টি বেড়ার ফাক দিয়া নিঃসংশয়ে উকিঝুকি মারিবে, শেষে ঘরে ফিরিয়া গিয়া সোজা ভাষায় হাসিতে হাসিতে বলিবে, হাড়ি-ডোমের মত কুন্ধমেরও নিকা হইয়া গেল। ছি ছি, এ-সব মনে করিলেও সে লজ্জায় কণ্টকিত হইয় উঠে। ষে-সব ভদ্রকন্যাদের সহিত সেও লেখাপড়া শিথিয়াছে, একসঙ্গে একভাবেই এত বড় হইয়াছে, দরিদ্র হইলেও আচার-ব্যবহারে তাহাদের অপেক্ষ সে যে ছোট এ-কথা লে মনে ঠাই দিতেও পারে না । কাল সন্ধ্যায় দাদার সহিত কুস্কমের কলহ হইয়াছিল, রাগ করিয়া কাঠের সিন্দুকের চাবিট। সে দাদার পায়ের কাছে ছুড়িয়া ফেলিয়া দিয়া সরোধে বলিয়াছিল, আর সে সংসারের কিছুতেই থাকিবে না। আজ প্রভাতে নদী হইতে স্নান করিয়া ফিরিয়া দেখিল, দাদা ঘরে নাই, চলিয়া গিয়াছে। তাহার ধামাটিও নাই। কুষম মনে মনে একটু হাসিয়া বলিল, কাল বকুনি খেয়েই দাদা আজ ভোরে উঠে পালিয়েচে । কলাকার ক্রটি সারিয়া লইবার জন্যই সে পলাইয়াছে, তাহা সত্য বটে ; কিন্তু কুক্ষম যাহা Y&&